Kolkata Midnight Talk

প্রতিদিন আমাদের সাথে অসংখ্য ঘটনা ঘটে। সেই সকল ঘটনা যেগুলো আমরা কেউ শেয়ার করার মতোন কাউকে পাইনা, আমাদের ব্লগে সেই সকল অজানা গল্প, অবলা পোষ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন লেখা ছাড়াও কিছু লেখকের ভূত ও ভালোবাসার গল্প পাবেন। আশা রাখছি আমাদের পাশে আপনাদের মতোন বন্ধুদেরকে সবসময় পাবো।

LightBlog

Breaking

শনিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২০

মায়ের ভালোবাসা। Rupsha Sb।

ছবি ও তথ্যসূত্রRupsha Sb
উপস্থাপনায় - Silent Talks Of Midnight Animals       

একটু একটু করে ক্লান্তি গুলো চোখের পাতায় বাসা বাঁধছে..সারাদিনের ক্লান্তি দুর করার জন্য চোখের সাথে আমাদের এই দেহটাকেও বিশ্রাম দেওয়ার প্রয়োজন। আজও মনে পড়ে যায় ছোটোবেলায় ঘুমানোর আগে দাদু-ঠাকুমারা কত গল্প বলতো, শ্লোক বলতো..কিন্তু এখন সেইসব দিনগুলো অতীত। এখন কেউ ঘুমানোর আগে শ্লোক বলে পিঠ সাপটে দেয়না..কিংবা ঘুরতে যাওয়ার আগে পকেটে জোর করে কিছু পয়সা দিয়ে কেউ বলেনা " এইনে টাকাটা রাখ..লজেন্স খাবি " এখন তো আমরা বড়ো হয়ে গেছি। তো বন্ধুরা ছোটোবেলায় না ফিরে যেতে পারলেও ছোটোবেলা টাকে কিছুক্ষণের জন্য উপভোগ করাই যেতে পারে। তো দেরী কিসের..চলে আসুন ঝটপট আমাদের গল্পের দুনিয়ায়। 

দমদম এয়ারপোর্ট গেটের আশেপাশের কোনো এক জায়গা থেকে বালিগঞ্জের এক দিদির কাছে খবর আসে একটা বিড়ালছানা দত্তক নেওয়ার জন্য। সেই বিড়ালছানাটিকে ওখান থেকে নিয়ে অন্য একটা জায়গাই নিয়ে যেতে হবে। ওই বাড়িতে আরও একটা বিড়ালছানা আছে। ছেলে বিড়াল ছানা। যার দত্তক নেওয়ার কথা বলে হচ্চে সে মেয়ে। তো যে দিদির কথা বলছি তার নাম রুপসা। 


এই ছবিটি যাদের বাড়ি থেকে বিড়ালের বাচ্চাটিকে দত্তক দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তেনাদের বাড়ির গ্যারেজে তোলা ছবিটি। এটা শ্যাম্পেনের দত্তক নেওয়ার আগের ছবি।

রুপসা যথারীতি যথাসময়ে যথাস্থানে গিয়ে হাজির হয়ে যায়। কিন্তু ওইযে কথায় আছে কপালের নাম গোপাল..কার ভাগ্যে কোথায় ঘুরে যায় কেউ বলতে পারেনা। যে বিড়ালছানাটি দত্তকের জন্য রুপসা দিদি ওই বাড়িতে গিয়েছিলো..সেই মেয়ে বিড়ালটিকে কিছুতেই ধরা যাচ্ছিলো না প্রথমে। পরে যখন ধরা হলো বাচ্চাটিকে..তখন সে কামড় দিয়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু..ওপর এক ছেলে বিড়ালছানাটি ক্রমাগত ওই দিদির পেছনে ঘুরে বেড়াচ্ছিলো সেইদিন। বাচ্চাটি এতো রুগ্ন যে দিদির মনে সেইসময় বিড়ালছানাটি কোনো দাগ কাটতে পারেনি। কিন্তু তবুও সাহস করে দিদি ওই বিড়ালটিকে ধরে যেই বাড়িতে দত্তক নেওয়া হবে সেখানে পৌঁছে যায়। দিদির মনে তখন একটা বিশ্বাস হয়েছিলো..তারা ওকে ফিরিয়ে দেবেনা। কিন্তু ওইযে ভাগ্যে। আমাদের ছেলে বিড়ালটি সেইদিন প্রতিজ্ঞা করেছিলো সে রুপসার সাথে রুপসার বাড়িতেই যাবে। তাইতো ওই নতুন বাড়িতে যাওয়ার পরেও সে সারাদিন কিছুই দাঁতে কাটেনি। 

রাত অবধি ওই নতুন বাড়ির লোকেরা ওই বিড়ালটিকে চোখে চোখে রেখেছিলেন। প্রায় রাত দুটো বাজার পর যে বা যিনি পাহারায় ছিলেন তার চোখ লেগে যায়। ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে বিড়ালটিকে না দেখতে পেয়ে সকলে ভয় পেতে যান। ওরা সকলে খেয়াল করেন ওই বাড়ির-ই কোনো এক জানলা ঠেলেঠুলে পালিয়ে গেছে বিড়ালটি। উনারা সাথে সাথে রুপসা দিদিকে ফোন করে জানায়।  তো ততক্ষণে নতুন বাড়ির লোকেরা সেই বিড়ালটিকে খুঁজেও পেয়ে যায়। তারা দিদিকে সেই ব্যাপারটি জানায়। কিন্তু বিড়ালটি সেই আগের দিনের মতোন সেইদিনকেও কিছু খাইনি। এই বিষয়টা জানার পর থেকে রুপসা দিদিও চিন্তায় পরে যায়।

দিদি বিড়ালকে বোতল ফিড করানোর সকল সরঞ্জাম নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে খবর পেলো বিড়ালটি আবারো নিখোঁজ। উনারা অনেক খুঁজলো কিন্তু পাইনি। দিদিও শেষবারের মতোন ওদের সাথে বাচ্চাটিকে খোঁজার একটা বৃথা চেষ্টা করলো। কিন্তু পেলোনা। শেষে সবাই যখন পুরোপুরি ব্যর্থ, দিদিও হার স্বীকার করে ফিরছে তখন কোনো এক গাড়ির তলা থেকে বিড়ালটি সরু গলায় ডাকতে ডাকতে বাইরে বেড়িয়ে এলো। ঘটনাটি সকলকে অবাক করে..ওর বাড়ির লোকেরা তন্নতন্ন করে খুঁজেও বিড়ালটির কোনো খোঁজ পেলোনা আর এদিকে ওহ স্বইচ্ছায় নিজে থেকে বেড়িয়ে এসে দিদির কাছে ধরা দিলো।

রুপসা দিদি তখন এটা বুঝতে পারে যে..এই ছেলে মনেপ্রাণে সিদ্ধান্ত নিয়েই নিয়েছে সে রুপসা দিদির বাড়িতেই থাকবে।

দিদির তখন এই বিষয়ে কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিলোনা। কিন্তু ওইযে বিড়ালটির মুখের দিকে তাকিয়ে মায়ায় পড়ে গেলেন। বিড়ালটি ৩৬ ঘন্টার উপরে কিছুই খাইনি। দিদি তাকে তৎক্ষনাৎ একটা পেট স্টোরে নিয়ে গেলো..সেখানে গিয়ে জানতে পারলো ওখানে কোনো ভেট ( vet - পশুচিকিৎসক ) আজকে বসিনি। তবুও কষ্টকরে একজন ভেটের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারলেন বিড়ালটিকে স্যালাইন দিতে হবে । দিদির বক্তব্য অনুযায়ী, পরের দিন যখন ভেটের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়.. severe respiratory tract infection, nebuliser and heat দিয়ে দিয়ে বিড়ালটিকে অনেক কষ্টে সুস্থ করে তোলা হয়। বিড়ালটি আস্তে আস্তে খাওয়া শুরু করে।


এই ছবিটি vet দেখানোর দ্বিতীয় কি তৃতীয় দিনের ছবি।  

সেইদিন থেকেই শুরু হলো রুপসা দিসি আর শ্যাম্পেন এর এক নতুন জীবন। হ্যাঁ ভালোবেসে অনেক নাম ধরেই বাবুকে ডাকা হয় কিন্তু বাবু শুধু এই নামেই সাড়া দেয়।

জন্মতারিখ আনুমানিক ১৫ এই সেপ্টেম্বর ২০১৭..কারণ যার বাড়ির বিড়াল সে নিজেও বলতে পারিনি বিড়ালটার জন্মতারিখ।

শ্যাম্পেন এর এক ভাই আছে যার নাম T'Challa। তার গল্প অন্যদিন শোনাবো।

ভাবতেও অবাক লাগে। দিদিতো সেইদিন একটা বিড়লকে অন্য একটা পরিবারে পৌঁছে দিতে গেছিলো। কিন্তু সেখানে গিয়ে ঘটে গেলো এই ম্যাজিক। শ্যাম্পেনের বোনকে কে দত্তক নেয় সেটা দিদি জানতে পারিনি।


ফ্যামিলির ফটো 

দিদির মনে শ্যাম্পেন অনেকটা জায়গা দখল করে রয়েছে। তারা দুইজন দুইজনকে খুব ভালোবাসে। শ্যাম্পেন যখন দিদির উপর রাগ করে তখন তাকে ট্রিট দিতে হয় নাহলে বাবুর রাগ ভাঙেনা। তবে সত্যি বলতে অহ একদম অভিমানী নয়। যখনি দিদির বাড়ির কেউ কষ্ট পায় কিংবা অসুস্থ হয়ে যায় অহ তখন একদম পাশ ছাড়েনা। বিশেষত দিদির। একটা বিড়াল হয়েও সে রুপসা দিদির একজন আদর্শ ছেলে হয়ে উঠার চেষ্টা করছে।  ওর সবথেকে বিশেষ যে গুন। দিদির প্রতি ভালোবাসা ও এক বিশেষ আকর্ষণ। যার চাকা সেই ছোটোথেকেই ঘুরতে শুরু করেছিলো।


ভাবতেও অবাক লাগে ফেসবুকের একটা পোস্ট দেখে এই একটা দীর্ঘ যাত্রা শুরু হয়েছিলো। যাকিনা আজও বর্তমান। আপনারা সবাই আশীর্বাদ করবেন যেন দিদি ও তার প্রিয় শ্যাম্পেন ভালোথাকে।

অঙ্কিতা দিদি ও দিদির ছানাপোনা

বন্ধুরা সবাই কেমন আছো? অনেকদিন পর আবারো একটা গল্প নিয়ে চলে এলাম।  যেই গল্পের মুখ্য চরিত্র কাজল, আলু আর মায়াকে নিয়ে। অঙ্কিতা দিই হচ্ছে এই বাচ...