Kolkata Midnight Talk

প্রতিদিন আমাদের সাথে অসংখ্য ঘটনা ঘটে। সেই সকল ঘটনা যেগুলো আমরা কেউ শেয়ার করার মতোন কাউকে পাইনা, আমাদের ব্লগে সেই সকল অজানা গল্প, অবলা পোষ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন লেখা ছাড়াও কিছু লেখকের ভূত ও ভালোবাসার গল্প পাবেন। আশা রাখছি আমাদের পাশে আপনাদের মতোন বন্ধুদেরকে সবসময় পাবো।

LightBlog

Breaking

শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২০

কালোবিড়ালের কালরাত্রি

এতো না ভেবে গলায় দে এক কোপ।
 - না গো কেল্টু দা..ওকে দেখে কেন জানি আমার খুব মায়া হচ্ছে..

কেল্টু - আরে বিজু..তুই কি চাস না আমরা উচ্চমাধ্যমিকে ইতিহাস পরীক্ষায় ভালো নম্বরে পাশ করি। কলেজে গিয়ে সুন্দর সুন্দর মেয়েদের সাথে পার্কে ঘুরি ওদের সাথে সিনেমা দেখে..জুনিয়ার ছেলেদের কাছে নিজের ইমেজ-টা ঝা-চকচকে করি??
চাস কিনা বল..??

বিজু - আরে কেল্টু দা..সে তো আমি কেন তুমিও এই একি জিনিস চাও। পরপর তিন বছর ধরেই তো ইস্কুলটাকে আঁকড়ে ধরে বসে আছি..একটা সাবজেক্ট.. জাস্ট একটা সাবজেক্ট.. ইতিহাস..এই ইতিহাসের জন্য
বাড়িতে স্কুলে মুখ দেখাতে পারিনা। কবে যে পাশ করবো
 কিন্তু এই পাপ কাজ আমি করতে পারবোনা..তারথেকে ভালো আমি ওকে ধরছি তুমি কোপ দাও।।

কেল্টু - তবে রে..তুই দেখি পুরুষ সমাজের নাম ডুবিয়ে দিলি রে..

বিজু - এভাবে বলোনা কেল্টু দা, তুমি বলোনা..এইভাবে ওর যদি প্রাণ নিই তাহলে কি আমরা পরীক্ষায় পাশ করে যাবো।।

কেল্টু - আরে বিজু..তুই আমার উপরে সন্দেহ করিস। পাশের বাড়ির রুপালি বৌদিকে দেখে ঘটে কিছু আসছেনা..তোর..
রুপালি বৌদি গত চারবছর চেষ্টা করেও সন্তানের মুখ দেখতে পারেনি, তাই শেষে বৌদির বর কুয়েতে কাজে চলে গেলো..শ্বশুর বাড়ি আর বাপের বাড়ির চাপে শেষে রুপালি বৌদি লাল বাবার কাছে গেলো..লাল বাবা আমাবস্যার রাতে একটা কালোবিড়াল নিয়ে তার চেম্বারে কাউকে না জানিয়ে গভীর রাতে গোপনে দেখা করতে বলেছিলো..এই ঘটনার একবছর পর বৌদিতো চার বছরের ইতিহাস ভেঙে দিলো..সেই রুপালি বৌদি তার স্বামী ও সন্তান নিয়ে বেশ সুখেই আছে। সকলে যখন তার এই সফল হওয়ার পেছনের রহস্যর কথা জিজ্ঞেস করে..তখন বৌদি বলে..আমাবস্যার রাতে গভীর  জঙ্গলে গিয়ে একটা কালো বিড়াল-কে এক কোপে ধর থেকে মুণ্ডু আলাদা করে দিয়েছিলো..আর তারপরেই বৌদি এখন একজন সফল মা।

আরে, পাশের পাড়ায় বোস বাড়ির ছোটো ছেলেটা..কত পরীক্ষা দিয়েও একটাও চাকরি পেলোনা..শেষে কোথায় গেলো?? ওই লাল বাবার কাছে।। ব্যস ভাই..সেও বিড়াল নিয়ে গেলো..গভীর জঙ্গলে..আর আজ দেখ আমাদের এলাকার সবথেকে উঁচু বাড়ি কার?
পরেশ বোসের।

পাড়ার সবথেকে বড়ো ব্যবসায়ী কে?
পরেশ বোস।

বিজু - কিন্তু কেল্টু দা..বিজু তো তার বাড়ির পেছনে বছরের পর বছর ধরে পড়ে থাকা একটা পরিত্যক্ত কুয়োতে একটা পড়ে যাওয়া ছাগলের বাচ্চা তুলতে গিয়ে..চার ব্যাগ ভরতি সোনা-দানা পেয়েছিলো..আবার অনেকে বলতো পরেশ বোসের বাবা নাকি লটারি পেয়ে ছেলের ব্যবসা দ্বার করিয়ে ছিলো।

কেল্টু - এই দেখ আমাকে ঠিকভূল বোঝাতে আসবি না। তুই বিড়ালটাকে ধর..আমি দিচ্ছি এক কোপে ধর থেকে মুন্ডু আলাদা করে।

হু..লাল বাবার কথা অমান্য করে।। আরে লাল বাবাকে অমান্য করার ফল হাতেনাতে পাবি।

নে নে ধর..

বিজু শক্ত করে ধরে আছে..কেল্টু দা..ভোজালি-টা মাঝ আকাশের দিকে টিপ করে উপরে তুলে যেই নীচে নামাবে..ওমনি ভোজালি-টা হাত থেকে ফেলে দিলো..
তাই দেখে বিজু বললো..
 - ওহহ কেল্টু দা..
কি হলো?? ওকে মারবে না?

কেল্টু - ওর দিকে একবার তাকিয়ে দেখ..কেমন ছটফট করছে..

বিজু - তো??
পরীক্ষায় পাশ করতে চাও হ্যাঁ কি না বলো..

কেল্টু - আরে সে তো করতে চাই। লাল বাবাতো আমাকে এই একটাই উপায় বললেন..পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেতে হলে..আমাবস্যার গভীর রাতে একটা কালো বিড়ালকে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে..এক কোপে মুণ্ড ধর থেকে আলাদা করলেই পরীক্ষায় মিলবে ভালো নম্বর..

কিন্তু এই বিড়াল-টার দিকে তাকিয়ে আমার কেন জানিনা..ঘন্টির কথা মনে পড়ে যাচ্ছে..আহহহ রে..কি সুন্দর ছিলো বিড়াল খানা আমার।

না..না..এই কাজ আমি পারবোনা।

বিজু - তাহলে পরীক্ষায় কি হবে??

কেল্টু - আর কি হবে আরও একটা বছর বসে থাকতে হবে। চল ভাই বাড়ি যাই।
আর ওকেই ছেড়ে দে..বেচারা আমাদের জন্য আজ নিজের জীবন দিতে চলেছিলো।

এই হচ্ছে বর্তমান অবস্থা। মানুষ যখন অল্প সময়ের মধ্যে সাফল্যের মুখ দর্শন করতে চায়..তো তখন কিছু মানুষ স্বাভাবিক পথের থেকে উল্টোপথে চলতে খুব ভালোবাসে.. 
আর তার ফল ভোগ করতে হয় এই ছোটো ছোটো প্রাণীদের।

অথচ একটু ভালোভাবে দেখলেই দেখা যাবে যে সত্য মিথ্যার মুখোশ-টা কিন্তু আমদের নাকের ডগার সামনে থাকে

কিছু কুসংস্কারচ্ছন্ন মানুষের মনের মধ্যে কালো-সাদা,ধনী-গরীব,জাত-পাত ওই বিষয় গুলো খুব গভীর ভাবে বিস্তার করে..

তারা আবার পশুদের মধ্যেও কালো সাদা এসবের গণ্ডী টেনে দিয়েছে..

কালো বিড়াল রাস্তা কাটলে দিন নাকি অশুভ যায়।
তারাই আবার শনিবার আর মঙ্গলবার রাস্তায় কালো কুকুর খোঁজে ..রুটি অথবা বিস্কুট খাইয়ে নিজের দোষ কাটানোর জন্য। 
অথবা ভোর বেলায় সূর্য ওঠার আগে খালি পায়ে মুড়ি কিংবা লাড্ডু হাতে করে ছিটিয়ে দিয়ে কাককে খাইয়ে নিজের কুসংস্কার পূর্ণ মনটাকে শান্তির জল দেয়।

একটু দেওয়ালে কান পাতলেই এইরকম অনেক কুসংস্কারের গল্প সিনেমার পর্দার মতোন চোখে ভাসে।

কালো বিড়াল রাস্তা কাটলে নাকি দিন অশুভ যায়..তাহলে তো কালো মানুষ রাস্তা পারাপার করলেও তাদের সাথে একি জিনিস হতে পারে..এইসকল মানুষ গুলো নিজের মতামতের থেকে অন্য লোকেদের হাসি দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া গল্প গুলো নিজের মনে আঠা দিয়ে আটকে নেয়..

আর ফলস্বরূপ এইরকম নির্যাতনের ঘটনা আজ নাহয় কাল ব্রেকিং নিউজ হিসেবে চারিদিকে বিরাজ করে।

যাক গিয়ে আমার কি..
আমি গল্প লেখাই মন দিই..

তো আমাদের ওই গল্পের কেল্টু দা ও তার বন্ধু বিজু..দুইজনেই ইতিহাসে পাশ করে গেছিলো সেবার। কারণ ওইযে কালো বিড়াল..যেই মাস্টার ওদের প্রশ্নপত্র দিয়েছিলো পরীক্ষা হলে..সেই  মাস্টারের স্কুলে যাওয়ার পথে একটা কালো বিড়াল রাস্তা কেটে দেয়..যেহেতু পরীক্ষার ব্যাপার তাই মাস্টারমশাই সেখানে বেশীক্ষণ দাঁড়ায়নি, নাহলে যতক্ষণ না কেউ ওই রাস্তা দিয়ে যেত..ততক্ষণ উনি ওই একি ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতেন।
তাই পরীক্ষার হলে প্রশ্নপত্র দেওয়ার পর তিনি কল্পনার দূনিয়াতে হারিয়ে যায়..যেখানে সে চিন্তা করে তার আসন্ন বিপদ কি হবে..

আর এদিকে ক্লাসের সকল ছাত্ররা নিশ্চুপ ভাবে টুকলি করে..গোটা পরীক্ষার ব্যাপার-টা সহজ করে নিয়েছিলো। কেল্টু দা আর বিজুর পরীক্ষা দিয়ে যখন ওরা বাড়ি ফিরছিলো..তখন যদি আপনি ওদের হাসি-টা দেখতেন। তবে আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি....আপনার মুখে কেউ পেল্লায় সাইজের রসগোল্লা ভরে দিলেও..আপনার মুখের হাসিটা কেল্টুদা ও বিজুর মতোন মন কারবে না।

আলোচ্যে ঘটনাটি কাল্পনিক....

** দয়া করে পরের বার থেকে এইরকম কুসংস্কার কে প্রশ্রয় দেবেন না, কারণ কালো সাদার মধ্যে পার্থক্য নেই কোনো..এগুলো আমরাই বানিয়েছি..তাই কোনো রকম কুসংস্কারের বশে এসে এদের প্রাণ নিয়ে ছেলেখেলা করবেন না, আপনি ভালো কাজ করলে সেই ভালো কাজের ফল দেরীতে হলেও ঠিক পাবেন **

ফেসবুক পেজ - silent talks of midnight animals.. 
11/09/2020

অঙ্কিতা দিদি ও দিদির ছানাপোনা

বন্ধুরা সবাই কেমন আছো? অনেকদিন পর আবারো একটা গল্প নিয়ে চলে এলাম।  যেই গল্পের মুখ্য চরিত্র কাজল, আলু আর মায়াকে নিয়ে। অঙ্কিতা দিই হচ্ছে এই বাচ...