Kolkata Midnight Talk

প্রতিদিন আমাদের সাথে অসংখ্য ঘটনা ঘটে। সেই সকল ঘটনা যেগুলো আমরা কেউ শেয়ার করার মতোন কাউকে পাইনা, আমাদের ব্লগে সেই সকল অজানা গল্প, অবলা পোষ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন লেখা ছাড়াও কিছু লেখকের ভূত ও ভালোবাসার গল্প পাবেন। আশা রাখছি আমাদের পাশে আপনাদের মতোন বন্ধুদেরকে সবসময় পাবো।

LightBlog

Breaking

শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২০

অক্টোবর ৩০, ২০২০

পাকু চক্রবর্তীর গল্পের দেশে। Ankita Maitra।


রাতের বেলায় পাতকুয়োর ভেতরে পড়ে গেছিলো পাকুরানী নামের এক বিড়ালসোনা।পাকুর বাবা পাতকুয়োর ভেতরে একটা দড়ি দিয়ে পেঁচানো বালতি ফেলে দিয়ে..উপর থেকে বললো..উঠে আয় পাকু..তারপর কি হলো..?


হেই বন্ধুরা আমাদের জীবনে এমন কিছু মুহুর্ত আসে যেই মুহুর্ত কে আমরা বারবার উপভোগ করতে চাই। এই যেমন ছেলেবেলা, স্কুলজীবন।
ছেলেবেলা সত্যিই আমাদের অপূর্ব ছিলো। সেই সুন্দর মুহুর্ত আমাদের স্মৃতির প্রতিটা কোণায় গাঁথা আছে। মাঝেমধ্যে আমরা একবারের জন্য হলেও মনে মনে চিন্তা করি।। ইসস ছেলেবেলাটাকে যদি আবারো ফিরে পেতাম। আমাদের Silient talks of midnight animals ফেসবুক পেজে আপনাকে জানাই স্বাগতম। যেখানে আমরা সকলের ভালোলাগা,ভালোবাসা টাকে অন্যভাবে গল্পের চাঁদরে মুড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা করি। যাতে অবলাপশুদের উপর অত্যাচার কম হয়। আমরা ভালোবাসি অবলাদের, ভালোবাসি সাহিত্যেকে। ভালোবাসি ভাষাকে। 


আজ আমি আপনাদের হাওড়ার অঙ্কিতার বাড়ির ছোটো সদস্য, পাকুরানী চক্রবর্তীর একটা ছোটো গল্প শোনাবো। পাকুর মা'য়ের কাছে আমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি..আমাদের প্রয়োজনীয় তথ্য ও ছবি দিয়ে শেয়ার করার জন্য। গল্পটি জানিনা আপনারা কতটা উপভোগ করবেন..তবে চেষ্টা করবেন একটু মন দিয়ে গল্পের ঘটনা গুলোকে অনুভব করার। তাহলে আপনি পাকুদের বাড়ির প্রতিটা মুহুর্ত উপলব্ধি করতে পারবেন। তো আসুন আমাদের গল্পের দুনিয়ায়..আমি আপনাদের স্বাগতম জানালাম..এক মা ও তার মেয়ের এক ভালোবাসা ভরা দুনিয়ায়।


পাকু অঙ্কিতার বাপের বাড়িতেই জন্ম নিয়েছিলো ২০২০ সালের সম্ভবত জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারীর প্রথম সপ্তাহে। মার্চ মাস থেকে লকডাউন পরে যাওয়ায় তিনি বাপের বাড়িতেই আটকে গেছিলেন। তখন থেকেই গল্পের মোড় অন্যদিকে এগোতে থাকে। 

পাকু সে তার মা'কে প্রচন্ড ভালোবাসে। মায়ের লক্ষী মেয়ে যাকে বলে। সকালে খাওয়ার হিসেবে পাকু সোনা ম্যাগি,দুধ বিস্কুট ( মেরি বিস্কুট ) এবং আমুল দুধ খায়।
আমাদের পাকু সোনা কিন্তু আর পাঁচটা থেকে আলাদা। তাকে যখন মাঝেমধ্যে চিকেন খেতে দেওয়া হয় তখন সে কোনো এক অজানা ভাষার গান খুশির মেজাজে গাইতে থাকে, এই হচ্ছে গানের একটা লাইন। " amna namna na "
যখন পাকুকে রাগানোর জন্য পাকুর পাতের থেকে চিকেন-টা তুলে নেওয়া হয় তখন পাকুর করুণ মুখের দিকে তাকালে যেন মনে হয় এই বুঝি ঝগড়া লাগলো বলে।  

ছবি - পাকুর সাথে পাকুুর মা ও বাবা

তবে সেই রাগ সাময়িক। পাকুর যখন আনন্দ হয় তখন সে..মশার মতোন গুনগুন করে..আর এইপ্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে ছুঁটে বেড়ায়।

খুশির মেজাজে কখনো সে অঙ্কিতার মায়ের শাড়ির আচল টেনে বেড়ায় কিংবা অঙ্কিতার বাড়ির বাকি লোকজন্দের জামা কাপড় যাই পারে টান দিয়ে খেলা করার চেষ্টা করে।

পাকুর যখন আদর খাওয়ার ইচ্ছে হয় তখন সে মাটিতে গড়াগড়ি খায়। মানে বাবুকে কোলে তুলে আদর করে।

পাকু সোনা বল নিয়ে খেলতে খুব ভালোবাসে। বিশেষ গুণ বলতে পাকু মাঝেমধ্যে মানুষের মতোন হাত দিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু খারাপ লাগার বিষয় এই যে..পাকুর হাতে খাওয়ার ওঠেনা। খাওয়ার সময়ের বিশেষ কোনো নিয়মাবলী নেই। বাবা মায়ের সাথেই পাকু খেতে বসে, আলাদা কোনো খাবার সময় নেই। তবে হ্যাঁ খাওয়ার আগে হাত দিয়ে মাঝেমধ্যে যাচাই করে নেয় খাওয়ার গরম নাকি ঠান্ডা।
ছবিতে যেই চেয়ারটি দেখছেন সেটি পাকুর প্রিয় চেয়ার।

পাকু তার মায়ের শরীর খারাপ হলে কিছুটা হলেও বুঝতে পারে, সে তার মায়ের মাথার কাছে এসে ডাকে। মানে সে বলতে চাইছে কি হয়েছে তোমার?

পাকুর মা, পাকুকে তার মনের কথা যখন বলে তখন সে চুপ করে শোনে।

বাড়ির মধ্যে আরশোলা,ইঁদুর, পিঁপড়ে, টিকটিকি যাই দেখুক না কেন বাবু ওদের ধরে খেলা শুরু করে দেয়। তখন অবশ্য ওদের অনেকেই ভয়ে মারা যায়।

একটা ঘটনা শেয়ার করি তাহলে..
একবার পাকু টিকটিকি খেয়ে নিয়েছিলো। পাকুর মা তখন খুব দুশ্চিন্তা করছিলেন কারণ টিকটিকি খুবই বিষাক্ত। তখন তিনি এক ভেট কে জানায় ভেট তাদের কিছু মেডিসিন বলে। তবে সেই মেডিসিনের আর দরকার পড়েনি..কিছুক্ষণ পর পাকু বমি করে সব বের করে দিয়ে
পাশের পাঁচিলে উঠে বসলো। কিছুক্ষণ পর সে ঘাস খেয়ে আবার স্বাভাবিক হয়ে গেলো। বাবু পুরো ফিট্। 

পাকুর গায়ে কালো দাগ গুলী হৃদয়ের আকারের সেটি আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন। পাকুর যাতে নজর না লাগে সেজন্য পাকুর মা পাকুকে কাজলের টিকা পড়িয়ে দেন।

ছবিতে যেই টুলটি দেখছেন এটি পাকুর অন্য একটি প্রিয় টুল।

পাকুর জীবনে একটি স্মরণীয় ঘটনা, জুলাই মাসের একদিন খুব ঝড় বৃষ্টি হচ্ছিলো,পাকু খেলতে খেলতে বাড়ি থেকে দুপুরে বেড়িয়ে যায়। ঝড় বৃষ্টিতে বাড়ির দরজা জানলা বন্ধ ছিলো। পাকুর মা দুশিন্তা করলেও তিনি ভেবেছিলেন পাকু হয়তো কোনো ছাওনির তলায় আছে,ঝড়বৃষ্টি থামলে এমনি চলে আসবে। কিন্তু পাকু বাড়িতে না আসায় তার মা..এদিকওদিক খুঁজতে বেড়িয়ে যায়..পাকুর নাম ধরে ডাকতে থাকে  কিন্তু কোনো সাড়া পায়না। 

সেইদিন রাত দশটার সময় অঙ্কিতার বোন সেদিন ওই বাড়িতে যায়। তিনি কথায় কথায় বলেন যে..কোথা থেকে একটা বিড়ালের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। 

তখন একটু ধাতস্থ হয়ে অঙ্কিতা বোঝার চেষ্টা করে আওয়াজটা কোথা থেকে আসছে। এদিকে অঙ্কিতার বর বাড়িতে একটু দেরী করে ফিরেছিলো সেইদিন। তিনিও অঙ্কিতার সাথে আশেপাশে খুঁজতে থাকে। তখন তারা খুঁজতে খুঁজতে উপলব্ধি করতে পারে এই আওয়াজ তাদের বাড়ির পেছন দিকের পাতকুয়োর মধ্যে থেকে আসছে। তারা দুইজনে সেখানে গিয়ে দেখে পাকু পাতকুয়োর ভেতরে পড়ে গেছে। তারা যতোবার নাম ধরে ডাকছিলো পাকু সাড়া দিচ্ছিলো। তখন সেইরকম অবস্থায় তাদের মাথায় কিছুই আসছিলোনা। তারা তখন কি করে ওকে বাঁচাবে। তখন ওই কুয়োর ভেতরে একটা বালতিকে পুরনো দড়ি দিয়ে বেঁধে পাকুর বাবা কুয়োর ভেতরে ফেলে দেয়। এবং পাকুর নাম ধরে ডাকতে থাকে। বেশ কিছুবার প্রচেষ্টা ও ভাগ্যের জোড় থাকায়..পাকুও বালতির ভেতরে উঠে পড়ে। হ্যাঁ বন্ধুরা আপনাদের কাছে এটি গল্প মনে হতে পারে তবে তখন সেই মুহুর্তে অঙ্কিতা ও তার বরের পক্ষে কতটা যে ভয়ঙ্কর ছিলো সেটা কেবল তারাই জানে। পাকুর জায়গাই অন্য কোনো বিড়াল হলে ভয় পেতো..তবে পাকুকে তার মা বাবা যেমনভাবেই হোক সুরক্ষিত ভাবে উপরে তুলতে 
চাইছিলেন। পাকুর বুদ্ধিকেও স্যালুট দিতে হয়। সে খুবি সাহসী ও বুদ্ধিমতী। 


পাকুর মা বলে, অনেকেই বিড়ালের নখ কেটে দেন। তবে তিনি এই বিষয়ে বলেন যে..এটা মোটেও উচিৎ কাজ নয়। কারণ তাদের নিরাপত্তার জন্য ওটি বিশেষ জরুরী। 

পাকু সকলের কাছে যায়না। ও খুব মানুষ চেনে। নিজের পিছন্দের ব্যক্তির কাছেই যায়। ওর অভিমান হলে চুপ করে বসে থাকে..বেশী রাগ হলে ও বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায়। তখন পাকুকে অনেক আদর করতে হয়,বেশীবেশী করে ভালোবাসতে হয়।

খুববেশীদিন না..পাকু তার বয়ফ্রেন্ড কে তার মায়ের কাছে নিয়ে যায়। তবে বিড়ালটি সারা ঘরে বাথরুম করতো..এটা স্বাভাবিক, বিড়ালরা এটি করেই থাকে।

পাকুর বাবা যখন বাড়িতে আসে..একদিন পাকুর মা তার বর মানে পাকুর বাবাকে জানায় পুরো ব্যাপারটা। সবশুনে পাকুর বাবা পাকুকে একটু বকে আর কানমুলে দেয়।

সেইরাগে পাকু একদিনের জন্য বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায়।

আমাদের পাকু সোনা ঠাকুরের সিংহাসনে উঠে বসে থাকে মাঝেমধ্যে। একবার সে ঠাকুরের সিংহাসনে উঠে সিঁদুর মেখে লাল হয়ে যায়। পাকুর গায়ের রঙ দেখে পাকুর মা..তো ভয় পেয়ে যায়..সে ভাবে হয় পাকুর কিছু হয়েছে নাহলে শিকার করেছে..পরে তার মা ঠাকুর ঘরে গিয়ে বুঝতে পারলো পাকুর কুকীর্তির কথা।


পাকুর দুটো জায়গা খুব প্রিয়। সে ওই দুটো জায়গার ভাগ কাউকে দিতে চায়না। এক হচ্ছে তার প্রিয় টুল, অন্যটা হচ্ছে তার প্রিয় চেয়ার। যদি এই দুটোর মধ্যে কোনোটা কেউ দখল করে নেয়..ব্যস পাকুর চেঁচামেচি করে ওখান থেকে নামিয়ে দেয় তাদের।

পাকুর হাতের সামনে যেই জিনিস-টাই থাকুক না কেন..সোনার সবকিছুই চাই। যদি চেয়ার বা টুলের উপর সেই জিনিস-টা থাকে তাহলে তো কথাই নেই। 
পাকু মাঝেমধ্যে আলনা ও আলমারির মাথায় উঠে টেডি বিয়ার দের সাথে বসে থাকবে। তখন পাকুকে ডকলে সাড়া দেয়না।

পাকুর সদ্য প্রেম বিচ্ছেদ হয়েছে। হয়েছে নয় করেছে..বাবার ভয়ে। পাকুর বাবা সেই হুলো বিড়ালটিকে বকেছে আর বলেছে বাড়িতে এলে ঠ্যাং খোড়া করে দেবে।

বেচারি পাকু সোনাকে নিয়ে অঙ্কিতা ও তার মা একটা কাল্পনিক গান বানিয়েছেন।

" বাড়িতে ঢুকলেই ঠ্যাং খোড়া করে দেবো, বলেছে তোমার বাবাটা। অন্য বাড়ীতে আমি যাচ্ছি তাই। পাকুমানা আমি আর আসবো না..এখানে পাকুমানা আমি আর আসবোনা "

এই গানটি মজার উদ্দেশ্য নির্মিত্ত..কাউকে অসম্মান কিংবা ছোটো করার উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার হয়নি।

পাকুর মা ও পাকু দুইজনে দুইজনকে প্রচন্ড ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসার বন্ধন টা যেমন একজন সন্তানের সাথে তার মায়ের যে বন্ধন ঠিক সেইরকম। পাকুর মা ও পাকুর বাবা দুইজনেই পাকুর প্রচন্ড খেয়াল রাখে। পাকু বিড়াল হয়েও সে তার মায়ের প্রতি এক সন্তানের যে দায়িত্ব সেটি মানুষের মতোন যথাযথ পালন না করতে পারলেও..পাকু নিজের থেকে যতোটা সম্ভব তার বাবা ও মা কে ভালোবাসায় ভরিয়ে দেয়। পাকুর মা ও বাবা সন্তানস্নেহে ও ভালোবাসায় পাকুকে বড়ো করে তুলছে।  


তো বন্ধুরা এই হলো পাকুর জীবনের একটা ছোটো কাহিনী, যেটাকে গল্পের চাঁদরে ঢেকে দিয়েছি আমরা। তোমরা সকলে পাকু এবং তার মা-বাবা ও বাড়ির সবাইকে আশীর্বাদ করো যাতে ওরা ভালো থাকে।


উপরের গল্প রুপী ঘটনাটি ও চিত্রগুলো আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন - Ankita Maitra 

আর তথ্যসূত্র নিয়ে গল্পটি পরিবেশন করেছে - Silient talks of midnight animals

বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২০

অক্টোবর ২৯, ২০২০

ছোটো সোনা মুনিয়া। Anuradha Patel।


ছবি ও তথ্যসূত্র - Anuradha Patel
 উপস্থাপনায় - Silient Talks Of Midnight Animals      

হেই বন্ধুরা ধরুন একজন আপনাকে অনেক উৎসাহ নিয়ে কোনো কথা বলা শুরু করলো..আর আপনি তখন তাকে বললেন হ্যাঁ আমি তো এইকথাটা জানিই। সেইসময় যিনি আপনাকে কথাটা বলছিলেন তার মনের অবস্থাটা শুধুমাত্র তিনি ছাড়া আর কেউই সেটা উপলব্ধি করতে পারবেনা। আসলে আমাদের জীবনে কিছু কিছু ঘটনা থাকে যেগুলোকে আমরা সহজেই এড়িয়ে যাই। অথচ আজ যদি আপনি তার কথাটা একটু মন দিয়ে শুনতেন তাহলে হয়তো আপনার জানা কথার মধ্যেও একটা রহস্যজনক গন্ধ পেতেন। 

আমাদের রোজকার জীবনটা সত্যিই খুব সুন্দর হয়ে উঠতো যদি আমরা দোষ না খুঁজে কারুর মন খুঁজতাম, কারুর টাকা পয়সা না খুঁজে তার বন্ধুত্ব খুঁজতাম, কাউকে কষ্ট না দিয়ে বুকে টেনে নিতাম। আমাদের নেওয়া একটা ছোটো সিদ্ধান্ত আমাদের মনের মধ্যে একটা চাপ সৃষ্টি করে..সেটার ভার আমরা পরে গিয়ে উপলব্ধি করতে পারি।

ভেবে দেখুন, একদিকে একশো কেজি ওজনের এক ব্যাগ ভরতি খুচরো টাকা, আবার অন্যদিকে ১০০ কেজি ওজনের এক ব্যাগ ভরতি পালক।
 এখন আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, এখানে সবথেকে ভারী ব্যাগ কোনটি?
আপনি উত্তর দিলেন 
- নিশ্চয়ই ওই খুচরো টাকার ব্যাগটি।

না বন্ধুরা উত্তর হবে দুটো ব্যাগের ওজনই সমান।
( সকলেই যে উপরের প্রশ্নটার ভুল উত্তর দেবে সেটা নয়। ) 

কিছু সময় আমাদের কাছে সত্যিই অনেক মূল্যবান। যেগুলো জীবনের ইতিহাসের ভেলায় কাগজের নৌকা হয়ে ভাসমান অবস্থায় থাকে। 

আজ আমি আপনাদের দমদম থেকে অনুরাধা পাটেলর নামের এক মায়ের দুষ্টু ছেলে মুনিয়ার গল্প। হ্যাঁ মুনিয়া। আসলে মুনিয়া যখন ছোটো ছিলো তখনি তার নাম মুনিয়া রাখা হয়েছিলো। মুনিয়ার বাড়ির সকলে ভেবেছিলো মেয়েই হবে। কিন্তু ধীরেধীরে যখন মুনিয়া বড়ো হলো তখন তারা বুঝলো মুনিয়া আসলে মেয়ে নয় ছেলে। তাই নামটা আর পরিবর্তন হয়নি।


মুনিয়ার ২০১৭ সালের জুন মাসের কোনো এক তারিখে জন্ম। অন্যসব বিড়ালদের থেকে মুনিয়ার ব্যাপারটা একটুখানি আলাদা।

দুষ্টুমির থেকেও তার সবভেয়ে বেশী প্রিয় চিকেন কষা। হ্যাঁ সেই চিকেন..মুনিয়া ছোটো থেকেই তার মায়ের খুব কথা শোনে। তবে মুনিয়া সোনা দুষ্টু হলেও সে তার মাকে প্রচন্ড ভালোবাসে। 


মুনিয়া সোনা রেগে গেলে..ওর রাগ ভাঙাতে তখন মুনিয়ার মা'কে কোলে তুলে নিয়ে বলতে হয়। তুমি আমার হিরে..তুমি আমার মানিক। তুমি আমার সবথেকে দামি জিনিস। তুমি আমার সোনা ছেলে রাগ করেনা বাবু।


আমাদের মুনিয়া কিন্তু আজ অবধি চুরি করে কিছু খাইনি। 
বাবুর খিদে পেলে..সে কিন্তু তার মায়ের কাছে গিয়ে নালিশ জানায়..তার ছোটো মাথাটা মায়ের পায়ের সামনে নিয়ে গিয়ে
 গুটো দেয়..আর সেই গুতোর আঘাতে অভ্যস্ত অনুরাধা বুঝে যায় যে তার বাচ্চার খাবারের সময় হয়ে গেছে।



আসলে ভালোবাসাটাই সব৷
ভালোবাসা দিয়ে অনেক কিছু জয় করা সম্ভব। আমরা শুধু ব্যস্ততা নামক চাদরে নিজেদের মুড়ে রাখি। যেদিন এই ব্যস্ততার চাদর খুলে দেবো সেইদিন আমরা প্রতিটা ছোটো ছোটো আনান্দগুলোর বিন্ধু বিন্দু উপভোগ করতে পারবো।

বন্ধুরা আমাদের উদ্দেশ্যে বিড়াল কুকুরের প্রতি মানুষের ভালোবাসা গুলো একটু অন্যভাবে প্রকাশ করানো। যাতে একটু হলেও ওদের উপর যারা অত্যাচার করে..তাদের বিবেকে আমাদের এই গল্প গুলো গেঁথে তাদের মধ্যে মনুষ্যত্ব, ও অবলাপ্রাণীদের প্রতি ভালোবাসা জন্ম নেয়। জানিনা এইভাবে গল্পের মাধ্যমে আমরা কতটুকু ভালোবাসা বোঝাতে পারি। তবে আমাদের বিশ্বাস একদিন অবলাপ্রাণীদের মর্ম ও উপকারিতা, তাদের বন্ধু সুলভ আচরণ, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, তাদের মতোন বন্ধু শত্রুকে সহজে চিনে নেওয়ার ক্ষমতার গুরুত্ব সবাই একদিন উপলব্ধি করতে পারবে।

বুধবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২০

অক্টোবর ২৮, ২০২০

মৌমিতা ও পেটুকসোনার গল্প। Moumita Dhar।

ছবি - Moumita Dhar

হেই বন্ধুরা মাঝেমধ্যে আমরা সকলেই খুব তাড়াতাড়ি রেগে যাই। একটা ভালো কথা মুখ বাঁকিয়ে উত্তর দিই। হ্যাঁ কোনো সময় এর কারণ হয়ে থাকে মন খারাপ আবার কিছু পুরনো স্মৃতি যেগুলো খালি ভাবনার রাজ্যে নিয়ে যায় আবার হতে পারে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা আমাদের এই রাগের কারণ। এই রাগ,হিংসা আমাদের পক্ষে যে কতটা ক্ষতিকর হতে পারে এটা আমরা পরে বুঝতে পারি। সকলে শুধু রাগটাকেই বড়ো করে দেখে। আমরা যদি এই ছোটো ছোটো রাগ গুলোকে ঝেড়ে ফেলে দিতে পারি তাহলে বড়ো ধরনের একটা ক্ষয়ক্ষতির হাত দিয়ে আমরা বেঁচে যাবো। হাজার হোক রাগ করলে আর যাই হোক সমস্যার সমাধান হয়না। বরং সমস্যা আরও বাড়ে। আমাদের সকলকেই দরকার। কারণ আমাদের একটাই পরিচয় আমরা মানুষ। এইসব রাগ,হিংসা জীবনের পথে একটা বাধা যাকিনা সুখের রাস্তা জ্বালিয়ে দেওয়ার কাজে  ব্যবহার হয়। তবে আপনারা এখন গল্পের দুনিয়ায় প্রবেশ করতে চলেছেন তাই এখুনি মনের যতো রাগ,অভিমান আছে সেগুলি দুর করে ফেলুন তো দাদা-দিদিরা।

আমাদের Silient Talks Of Midnight Animals ফেসবুক পেজের গল্পের দুনিয়ায় আপনাকে জানাই স্বাগতম। 

আজ আপনারা যেই গল্পটি পড়তে চলেছেন সেটির শুরুটা ঠিক দুইবছর আগে।
২০১৮ সালের মার্চ মাসে..নিউ ব্যারাকপুরের আশেপাশের কোনো এক জায়গাই সদ্য জন্ম নেয় পেটুক নামের একটি মেয়ে বিড়ালের।

আলোচ্যে গল্পটির যাবতীয় তথ্য ও ছবি আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন - Moumita Dhar

উপস্থাপনায় - Silient Talks Of Midnight Animals.. 


যেইদিন আমাদের পেটুক সোনা ভুমিষ্ঠ হয়েছিলো ওইদিন কোনো কারন বশত মৌমিতা বাড়িতে ছিলোনা। পরে তিনি যখন বাড়ি ফেরে তখন সে তার মা ও বাবার কাছে এই ব্যাপারটি শুনেছে। সেইদিন খুব বৃষ্টি পড়ছিলো। যেই বিড়ালের সন্তান আমাদের পেটুক রানী। সেই বিড়ালটির প্রথম সন্তান ছিলো পেটুক। বাচ্চাটি কোথায় দিয়েছিলো সে সেটি কেউ ঠিকমতো বলতে পারেনি। তবে মৌমিতার বাড়ির গেটের সামনে বাচ্চাটির মা তার সন্তানকে ফেলে দিয়ে কোথায় যেন চলে যায়। তো মৌমিতার মা ওই বাচ্চাটিকে ঘরে নিয়ে আসে। বাচ্চাটিকে মুছিয়ে একটা গরম জায়গাই রেখে দিয়েছিলো। কিন্তু বৃষ্টি থামতেই বাচ্চাটির মা সেই গেটের সামনে এসে খুব কান্নাকাটি করতে থাকে..নিজের বাচ্চাকে না দেখতে পেয়ে। তখন মৌমিতার মা আমাদের পেটুকরানী কে তুলে দেয় তার মায়ের হাতে। আর ওর মা তার সন্তানকে নিয়ে চলে যায়।


পরের দিন,

মৌমিতার চোখে পড়ে সেই বাচ্চাটিকে মানে আমাদের পেটুকরানীকে। পেটুকের মা পেটুককে আবারো মুখে করে সেই বাড়িতে নিয়ে আসে। পেটুকের গায়ের একটুও লোম ছিলোনা, তার শরীরের পুরো লাল চামড়াটা দেখা যাচ্ছিলো..সেই দৃশ্য মৌমিতার গায়ের লোম কে দাক্বড় করিয়ে দেয়।

এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই পেটুকের মা পেটুককে মৌমিতার বাড়িতে নিয়ে আসতো। একদিন সন্ধ্যাবেলায় মৌমিতা একটু অন্যমনস্ক ছিলো, তখন পেটুকের মা পেটুককে নিয়ে আসে মৌমিতাদের বাড়িতে। তারা দুইজনেই খেলছিলো। খেলতে খেলতে পেটুকের মা একটু বেখেয়াল হয়ে যায়। ঠিক তখনি কোথা থেকে একটা বড়ো ইঁদুর এসে পেটুলের লেজ ধরে টানতে টানতে নিয়ে যায়। ওর মা যখন বুঝতে পারে যে তার সন্তানকে কেউ নিয়ে যাচ্ছে তখন সে চিৎকার করে উঠে। সেই চিৎকার শুনে মৌমিতা বাইরে যায় এবং সেই ভয়াবহ দৃশ্য দেখে..তবে ইঁদুরটি তখন পালিয়ে গিয়েছিলো। পেটুকের মা তখন জোড়ে জোড়ে কাঁদছিলো। আর পেটুক ভয়ে চুপ করে এক জায়গায় বসে আছে। পেটুকের লেজের গোড়ায় লেগে আছে রক্ত। মৌমিতা বিড়ালছানাটিকে ঘরে নিয়ে আসে। ব্যস তারপর থেকে আর কখনো সে তার পেটুককে পেটুকের মায়ের কাছে তুলে দেয়নি। পেটুক তখন একটা নতুন ঘর পেলো, সাথে পেলো একটা নতুন পরিবার।


পেটুককে দেখতে না পেয়ে পেটুকের মা যখন খুব কান্নাকাটি করতো। তখন পেটুকের মা'কে ধরে এনে বারান্দায় আটকে রেখে পেটুককে তার মায়ের কাছে দিয়ে দিতো। ওখানে পেটুকের মা পেটুককে দুধ খাওয়াতো, আর আদর করতো। যাই হয়ে যাক না কেন..পেটুকের মায়ের কাছে পেটুককে কখনোই একা ছাড়তো না..আর পেটুকের মা যাতে পেটুককে না নিয়ে যেতে পারে সেইদিকেও লক্ষ্য রাখতো।
পেটুককে আদর করানো হোক, কিংবা খেলা করা সিব মৌমিতার বাড়িতেই হতো। একসময় যখন মোহ কাটতে থাকে তখন পেটুকের মা আস্তে আস্তে করে ওইবাড়িতে আসা বন্ধ করে দিলো। শুধু পরে থাকলো তার সন্তান। শুরু হলো একটা নতুন জীবনের গল্প। পেটুকরানীর গল্প।

মৌমিতার বাড়ির একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হলো পেটুক। যখনি মৌমিতার কোনো আত্মীয়স্বজন ফোন করতো তারা আগে পেটুকের খবর নিতো। পেটুকসোনা ছোটোবেলায় খুব খেতে ভালোবাসতো। ঘুমাতো খুব কম। সবসময়ই মুখ চলতে থাকতো পেটুকের। তাই এই নাম। মৌমিতার পাশের বাড়ির এক প্রতিবেশী আমাদের নাদুসনুদুস পেটুকের আরও একটা নাম দিয়েছিলেন..তারা ভালোবেসে টেপি বলে ডাকতেন।



পেটুকের যতো আদর তার দিদি মৌমিতার কাছে। পেটুক এসে মৌমিতার নাকে চুমু দেয়, কখনো পায়ের আঙুল কামড়ে কিংবা হাতের আঙুল মুখে নিয়ে বোঝাতে চাইতো যে, আমাকে এখন আদর করো।

মৌমিতা যাই খাবার খাক না কেন..পেটুক মৌমিতার সামনে এসে আস্তে আস্তে মুখ নাড়াবে..মানে খাবার-টার ভাগ আমাকেও দাও।

ওর প্রিয় খাবার মিষ্টি।
বাড়িতে পূজো দেওয়ার সময় মৌমিতার মায়ের পাশে চুপ করে বসে থাকবে। মিষ্টির জন্য। ও জানে যে, মৌমিতার মা পূজো হয়ে গেলে ঠিক মিষ্টি দেবে।


আমাদের পেটুকরানীর রাগ ভাঙানোর জন্য হয় গুঁড়ো দুধ নাহয় মিষ্টি দিতেই হবে। নাহলে রাগ কমেনা।

মৌমিতার বাবা যেইদিন বাজারে যায়না সেইদিন পেটুক ঠিক বুঝে যায়। তখন পেটুক মৌমিতার বাবার পা টেনে ধরবে আর নাহলে পায়ে,হাতে মাথা দিয়ে আদর করে বোঝাতে চাইছে যে এখন বাজারে যাও। এটা একপ্রকার ঘুষ যেটার মাধ্যমে  পেটুক মৌমিতার বাবাকে বোঝাতে চাইছে এইবার বাজারে যাও।

বাবা যখন বাজারে যাবে তখন পেটুক গেট অবধি সে তার বাবাকে এগিয়ে দেবে, তখন সে গেটের আশেপাশেই অপেক্ষা করে..কখন মৌমিতার বাবা বাজার থেকে মাছ নিয়ে আসবে।


মৌমিতার বাবা যখন খেতেবসে..তখন পেটুক ও ওখানে বসে থাকে কারন সে জানে ওখানে বসে থাকলে কিছুনা কিছু সে পাবেই।

আমাদের এই ছোটো পেটুক মৌমিতার ছোটো বনের মতোন। মৌমিতা যাই করুক, যেই জিনিসটাই দেখুক তা সে ফুল হোক কিংবা অন্যকিছু সেইসব কিছুর-ই খুঁটিয়ে দেখে পেটুকরানী। পেটুকরানীর একটা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো তার দিদি মৌমিতাকে সকালে ঘুম থেকে উঠিয়ে দেয়। তা সে চুমুর মাধ্যমে হোক কিংবা হাল্কা সুরে ডেকে। তবে এমনি এমনি নয়। সেইসময় পেটুককে চটকে চটকে আদর করতে হয়।


একবার মৌমিতা দুইদিন বাড়ি ছিলোনা সেইসময় পেটুক মৌমিতার বাবার সাথে ঘুমিয়েভহিলো। তো ওইদুইদিন রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে মৌমিতার খাটের দিকে মাথা উঁচু করে দেখতো মৌমিতা আছে কি না। মৌমিতাকে না পেয়ে পেটুক মৌমিতার মায়ের কাছে গিয়ে ডাকতো।


ছবিতে যেই গোলাপফুলটা দেখছেন ওটা আগে মৌমিতার হাতে ছিলো। মৌমিতার সব জিনিস-ই পেটুকের পছন্দ তাইতো যখন মৌমিতা গোলাপফুলটা পেটুকের দিকে বাড়িয়ে দিলো..তখন পেটুক বুড়ো আঙুল দিয়ে ফুলটা ধরলো। আর ফুলের গন্ধ শুকে একভানে ফুলটার দিকে তাকিয়ে বুঝতে চেষ্টা করলো জিনিস-টা কি।


তো এটাই ছিলো আমাদের পেটুক সোনার গল্প। আমাদের আজকের গল্পটা কেমন লাগলো সেটা অবশ্যই জানাবেন।

বন্ধুরা আমাদের উদ্দেশ্যে সকলের মাঝে ভালোবাসা পৌঁছে দেওয়া যাতে একটু হলেও বিড়াল কুকুরের উপর অত্যাচার কম হয়। ওদের ও বাঁচার অধিকার আছে। আমরা মাঝেমধ্যে কোনো না কোনো ভাবে যারা বিড়াল কুকুর পোষে তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করি। এর মূলত অনেক কারণ আছে..এই যেমন ধরুন কারুর বাড়ির সামনে যদি অন্য কুকুরে এসে পায়খানা করে গেলো..তো সেক্ষেত্রে দোষ পড়বে পাশের বাড়ির কুকুরটার উপর। আবার এও ধরুন পাশের পাড়া থেকে একটা বিড়াল এসে এপাড়ার কারুর বাড়ি থেকে মাছ নিয়ে গেলো..তো এক্ষেত্রেও দোষটা সেই বিড়ালপ্রেমীদের বিড়ালের উপর পড়বেই। এছাড়া অনেকে বলে বিড়াল কুকুর ডাকা অমঙ্গল।

পায়খানা,বাথরুম,ডাক এগুলো স্বাভাবিক জিনিস। মানছি সবসময় উপরের কারণ গুলোর মতোন এপাড়ার বিড়ালগুলোর নির্দোষ নাও হতে পারে। 
তবে বিড়াল কুকুর পোষ মেনে গেলে ওরা প্রায় অনেক নিয়মকানুন মেনে চলে। আর সবথেকে বড়ো কথা কুকুর কে বাড়িতে রেখে যদিও পোষা যায় ( সবক্ষেত্রে নাও হতে পারে ) তবে বিড়ালকে আটকে রাখা একটু শক্ত। তবে পুরোপুরি পোষ মেনে গেলে আর তো কোনো কথাই নেই।

আপনাদের সকলের কাছে একটা বিনীত অনুরোধ, আপনি যদি কোনো বিড়াল কুকুরের দায়িত্ব না নিতে পারেন তবে যারা ওদের দেখভাল করে তাদের মনোযোগ ভেঙে দেবেন না। পারলে তাদের উৎসাহ দিন। ওইযে আগেই বলেছি ছোটো ছোটো রাগ গুলো আমরা যদি ঝেড়ে ফেলতে পারি তবে একটা বড়ো ধরণের ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে আমরা নিজেদের রক্ষা করতে পারি।

মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২০

অক্টোবর ২৭, ২০২০

কালু ও তার দিদির গল্প। Poulami Acharjee।

ছবি ও তথ্য - Poulami Acharjee 
উপস্থাপনয় - Silient Talks Of Midnight Animals  
হেই বন্ধুরা আমরা সকলেই জানি আমাদের জীবনের দাঁড়িপাল্লায় এমন একটা সময়ের ওজন পরিমাপ করতে হয় যেটার ফলাফল ওজন পরিমাপক ব্যাবহার করে হোক কিংবা না করে ফলাফল সবসময় চাহিদার বিপরীতে আসে। কারুর বংশে ছেলের সংখ্যা বেশী, আবার কেউ লাখ তপস্যা, তাবিজ কবজ, এই মন্দির ওই মন্দির। এই আমাবস্যায় পূজা করো তো আমাবস্যায় ওই করো, ওই গাছে সুতো বাঁধো, ওই ব্রত রাখো..গঙ্গা স্নান করো।

মানে মানুষ কে যে কত হেনস্থা করা হয় শুধুমাত্র যাদের ছেলে সন্তান হচ্ছেনা তাদের ছেলে হওয়ার জন্য। হ্যাঁ ঠিক তাই এইসব মানুষদের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে শুষে নেওয়া হয়। কিন্তু ফলাফল তারা কিছুই পায়না। কিন্তু শেষে যখন তারা ব্যাপারটা উপলব্ধি করে, তখন অনেকটা দেরী হয়ে গেছে। খরচের টাকার পরিমাণ হয় অনেক বেশী।
এক্ষেত্রে দম্পতি যদি পয়সাওয়ালা হয় তবে তাদের আঘাত সহজে হজম হলেও..মধ্যবিত্ত ঘরের লোকেদের হিসাবের অঙ্কটা গ্যাসের ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এদিকে যখন মা চাপ দেয় - বাবা, নাতি হলে দশটা আঙুল ভরে আংটি দেবো..এই ঘন্টাধ্বনি তে ঘরের চারিদিকে খুশির জোয়ারে চারিদিকে থইথই।
অন্যদিকে যে মা..মাসের পর মাস নিজের গর্ভে একটা প্রাণকে পরম স্নেহে বড়ো করতে থাকে..সেই মায়ের যখন ভ্রণ পরীক্ষা করে ছেলে না মেয়ে সেই বিষয়ের পরীক্ষা  করে বাচ্চাটি নষ্ট করার পরিকল্পনা সাজানো হয়..
তখন একটা মায়ের বুকে যে কি পরিমাণ কষ্ট হয় সেটা কি কেউ বোঝে?

তবে আমি আজ যেই গল্পটা বলবো সেটি অভিন্ন। আগেই বলে দিচ্ছি আমাদের গল্পের দুনিয়ায় আসতে গেলে.. আপনাকে হিংসা,রাজনীতি, ব্যস্ততা,অদয়ালু মনোভাবকে সুটকেস ভরে রেখে আসতে হবে। কারণ এই জগৎ পশুপাখি ঘিরে। এই জগৎ অবলা পশুদের অত্যাচার বন্ধের বিরুদ্ধে, এই জগৎ অবলাদের প্রতি অত্যাচার বন্ধ করে তাদের একটা ভালোবাসার দুনিয়ার চাঁদরে মুড়িয়ে দেওয়ার একটা ক্ষুদ্র প্রয়াস। তবে সেটি সম্ভব নয় যদি আপনারা আমাদের সাহায্যে করেন। একা একা রাজা হওয়া যায়না, আমাদের সকলের উদ্দেশ্য যেন এই অবলাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।


৩১/০৩/২০২০। দিনটি আরটা পাঁচটা দিনের মতোন এক নয়। ওইদিন বার্ণপুরের আশেপাশে কোনো একটা জায়গায় জন্ম হয়েছিলো ফুটফুটে একটি বিড়াল সোনার। যে বাড়িতে জন্ম নিয়েছিলো বিড়ালটি তারাই পরে ওর নাম রাখে কালু। 
আমাদের কালু খুব বদমায়েশি করলেও। কালুসোনার মা,বাবা ও দিদিকে ছাড়া পাঁচ মিনিটও চলেনা। বাবা যখন অফিস থেকে ফিরে আসে তখন যেই সময়ে বাবা বাড়ি আসে সেই সময়ে কালুসোনা জানলায় গিয়ে বসে থাকে। বাবার সাথেই রাতে বিছানায় ঘুমায়। 


খাবারের মধ্যে আমাদের কালুসোনার আমুল দুধের গুঁড়ো,ভাত, মাছ আর বেসনের পোকড়া তার খুব প্রিয়। যেটার গন্ধ যদি একবারও কালুর নাকে গেছে তো..কালু তার মা'কে পাঁচ মিনিটও দাঁড়াতে দেয়না।

ওর কোনো অভিযোগ থাকলে..সেটা ধরে নেওয়া খুব সোজা। কারণ ওইদিন বাবু রাতের বেলায় তার বাবার কাছে শুতে আসেনা। রাগ করে বসে থাকে। বাবার আদরের অপেক্ষা করে জানলায় বসে। হয়তো ভাবে কখন বাবা আদর করে তুলে নিয়ে যাবে তাকে। কালুর একটা দিদিও আছে যার নাম চিনি। সেই একমাত্র কালুর সঙ্গী। এরা দুইজনে যদি একবার এক হয়ে যায়..তো পুরো বাড়ি মাথায় তুলে রাখে।


ছবি - কালুর বাবা ও তার মায়ের সাথে তোলা ছবি

কালু সোনা সচরাচর রাগেনা, তবে রেগে গেলে তাকে আমুল দুধের গুঁড়ো দিতে হয় গো বাপু। এ ছাড়া সে আর কিছু বোঝে না গো। হ্যাঁ তবে বাবা যদি আদর করে তাহলেও বাবুর রাগ গলে জল হতে বেশী সময় লাগেনা। বাবাকে খুব ভালোবাসে।

ঘুম থেকে উঠে কালু সোনার দুধ খাওয়ার অপেক্ষায় থাকে,  তাইতো সে ডাইনিং চেয়ারের উপর বসে থাকে, যতক্ষণ না বাবুকে দুধ দেওয়া হচ্ছে ততক্ষণ সে ওখানেই বসে থাকবে।

কালু ও তার মায়ের সাথে তোলা ছবি


আমাদের কালু সোনার একটি বিশেষ গুণ হলো..সে কিন্তু ঘর নোংরা করতে একদম পছন্দ করেনা। ছোটোবেলা থেকেই কালুসোনা বাথরুমে গিয়েই প্রাকৃতিক ডাকযোগে সাড়া দিত সে। 

এছাড়া তার মায়ের মন খারাপ থাকলে মায়ের কাছে গিয়ে মা'কে আদর করে..যেন ওহ বলতে চাইছে মা তুমি চিন্তা করোনা, আমরা সবাই আছি তো। বাবা যদি কালু সোনাকে কিছু বলে তবে কালুসোনা সেটাও বোঝার চেষ্টা করে।

এই হচ্ছে তোমাদের প্রিয় কালুসোনা..তোমরা সকলে আশীর্বাদ করো কিন্তু আমাদের সোনাকে..যাতে কালুসোনার দীর্ঘ হয়।

পুরো ঘটনাটি Poulami Acharjee নামের এক দিদিভাই আমাদের জানিয়েছেন। তার খুব আদরের ভাই কালু। একসময় সে মন খারাপ ও করেছে কারণ  তার কোনো ভাই নেই..তবে এখন আর তার মন খারাপ হয়না। পৌলুমির মা, পৌলুমি কে বলেছে..তোর ভাই নেই তো কি হয়েছে? এরাই তোর ভাই..যারা তোকে কোনোদিনও কষ্ট দেবেনা।

গল্পটা কেমন লাগলো আপনাদের সেটা জানিনা। তবে তার মায়ের মতোন মা যেন সব জায়গায় বিরাজ করে। সত্যি এই গল্পটা যারা ছেলে চাই, ছেলে পছন্দ করেন তাদের কিছুটা হলেও শিক্ষার বিষয় হওয়া উচিৎ। তার মা দেখিয়ে দিয়েছেন ছেলে মেয়ের ভেদাভেদ বলে কিছু হয়না।


যেখানে আমরা যেখানে ছেলে ছেলে করে লড়াই করি, যেখানে এক শ্রেণীর সুবিধাবাদী মানুষ সেইসব মানুষদের দুর্বলতাকে ঘিরে ব্যাবসা শুরু করেছে সেখানে এই ঘটনার মূল্যে কতখানি সেটাই প্রশ্নের।

সর্বশেষে ছেলে মেয়ের মধ্যে ভেদাভেদ করবেন না। একটা মেয়ের জন্ম হয় বাবার ঘরে, সে বেশি দিন বাবার ঘরে থাকার ভাগ্যে নিয়ে আসেনা..কারণ তার মৃত্যু লেখা থাকে স্বামীর ঘরে। একটা মেয়ে হওয়া যে কতটা কষ্টের সেটার মর্ম সকলে বোঝেনা। তাই একটা অনুরোধ রইলো..পরেরবার থেকে ছেলে চাই, ছেলে চাই না করে যদি কন্যা সন্তান হয়..তো তাকে না ফেলে বরণ করে নিন। আর পারলে যে টাকা ছেলে হওয়ার পেছনে খরচ করতেন সেই টাকা মেয়ের ভবিষ্যৎ ও পড়াশোনার উপর খরচ করুন দেখবেন ঠকবেন না।

আলোচ্যে ঘটনাটি অনেক মেয়ের কাছেই ভরসা হয়ে দাঁড়াবে যাদের কিনা ভাই নেই, অথচ বাড়িতে ছোটোছোটো বিড়াল কুকুরের মতোন বন্ধুরা রয়েছে।

আমাদের উদ্দেশ্যে সকলের মধ্যে ভালোবাসা পৌঁছে দেওয়া যাতে মানুষ গুলো পশুগুলোর উপর একটু হলেও কম অত্যাচার করে।

সোমবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২০

অক্টোবর ২৬, ২০২০

ওরিও ও তার মায়ের গল্প।


ছবি ও তথ্য আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন -  প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল।  






আমাদের জীবনে প্রতিনিয়ত এমন কিছু ঘটনা ঘটে যে ঘটনাগুলো আমাদের জীবনের চলার পথের রাস্তাকে সম্পুর্ণ পালটে দেয়। আমরা সবকিছুর ভাগ সকলের সাথে ভাগ করে নিতে পারি। কিন্তু নিজের প্রিয়জনদের ভাগ আমরা কাউকে দিইনা। আমরা ভালোবাসাকে ছড়িয়ে দিতে পিছুপা নাহলেও ভালোবাসার ভাগ দিতে পারিনা। 

আজ আমি আপনাদের  প্রিয়াঙ্কা মন্ডলের জীবনে ঘটে যাওয়া একটা হৃদয়বিদারক ঘটনা শেয়ার করবো। 

বন্ধুরা আমাদের পেজ ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে চাই সকলের মধ্যে। যাতে ভালোবাসার রঙে সকলে ভেসে যেতে পারে সেই দুনিয়াই। যেখানে কোনো মানুষ অবলাদের উপর অত্যাচারের  সম্মুখীন হয়না। হ্যাঁ সেখানে অবলাদের খুব যত্ন করা হয়। হ্যাঁ এমন এক দুনিয়া সত্যি আছে যেখানে হিংসে নেই, আছে ভালোবাসা।

ফেসবুক খুলে চলে যান সার্চ বক্সে সেখানে লিখুন silient talks of midnight animals. ব্যাস আপনি এবার পৌঁছে গেছেন আমাদের সেই মজার দুনিয়াতে। এবার আপনি যেমন খুশি ইচ্ছুক সেইরকম গল্প পড়ুন,অথবা শুনুন। এরজন্য কোনো পয়সা লাগবেনা।



2019/09/10 বসিরহাটে ভ্যাবলা নামক একটি জায়গায় জন্মেছিলো প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল নামের এক দিদিভাইয়ের মেয়ে সন্তান নাম ওরিও। ওরিওর বয়স তখন ৪/৫ দিন হবে। বেচারির তখন চোখ ফোটেনি এবং পেটের নারি এখনও কাঁচা। সেই অবস্থায় বাড়িতে যখন প্রিয়াঙ্কা দিদি নিয়ে আসেন তখন বাড়ি থেকে অনেকেই বলেছিলো ওকে তুই বাঁচাতে পারবিনা। কিন্তু ওইযে মনের যেদ মানুষকে অনেক অসাধ্য সাধন করার ক্ষমতা দেয়। প্রিয়াঙ্কা দিদি বলেন, হ্যাঁ আমি ঠিক বাঁচাবো। তারপর থেকে শুরু হয় রাত-দিন এক করে সেবা। এই আদর আর সেবাই আমাদের ছোটো সোনাকে বড়ো করছিলো ধীরেধীরে। 


দিদির নিজের একজন কন্যা সন্তান আছে। তাকে যখন দিদি বিছানায় নিয়ে দুপুরে ঘুমোয় তখন আমাদের ছোটো ওরিও সোনাও দিদির কাছে শুয়ে পড়বে..তখন দিদি পরম স্নেহে ওকে ধরে নিজের পাশে শুয়ে দিত। 

ছবি - ছোটো ওরিও সোনা যখন দুধ খাচ্ছিলো তখনকার ছবি।  
বাড়ির সকলেও ওকে খুব ভালোবাসতো। দিদি নিজে ওকে ছোটো মেয়ে ভাবতো। যদি দিদিকে ওরিও কোথায় না দেখতে পেতো তখন সে চুপচাপ বসে থাকতো। তবে দিদির দেখা পেলে ব্যস..সোনাকে তখন আটকানো মুশকিল। যেখানেই থাকুকনা কেন দিদির আওয়াজ পেলে ছুটে চলে আসতো। পুরো যেন মানুষের মতোন।

রাতের বেলাতেও আমাদের প্রিয় সোনা তার মা ( প্রিয়াঙ্কা ) ও বাবার ( প্রিয়াঙ্কার বর ) মাঝখানে না শুলে ওর ঘুম-ই আসতো না।
ওহ না যদি না শোয় তবে দিদিদের ও রাতে ঠিকমতোন ঘুম হতোনা। প্রিয়াঙ্কা দিদির মেয়েও কিন্তু ছোটো বোন ওরিও কে খুব ভালোবাসতো।

বন্ধুরা আমরা সকলেই জানি সুখ-দুঃখ, হাসিখুশি,আবেগ আবদার এইসব টুকটাক জিনিস নিয়েই আমাদের পথ চলতে হয়। তাই ভালোর মাঝে খারাপ, খারাপের মাঝে ভালো এইসব সার্কেলের মতোন চলতে থাকে।


ওরিও'র যখন ১১ মাস বয়স তখন সে গর্ভবতী হয়। কিন্তু বেচারী খুব কষ্ট পাচ্ছিলো। তাই তার মা ডাক্তারকে ডাকেন। ডাক্তার এসে ট্রিটমেন্ট শুরু করে। ওরিও শেষমেশ তিনটি সন্তান প্রসব করে। কিন্তু বাচ্চাগুলো জীবিত নয় মৃত। সুখের সংসার সমুদ্রে জোয়ারভাটা লেগেই থাকে। সেইঘটনায় প্রিয়াঙ্কা দিদির মনেও উথাল-পাতাল ঢেউ তুলেছিলো। ঠিক তখনি তিনি জানতে পারেন যে, তার ছোটো মেয়ে ওরিও এই দুনিয়ায় নেই। 

বন্ধুরা ভুল চিকিৎসা জন্য এই পরিনতি হয়েছিলো নাকি সোনার ভাগ্যে তার সাথে লুকোচুরি খেলছিলো সেটির ইতিহাস এখনো অজানা। তবে চলে গেলো এক মেয়ে তার মায়ের বুক খালি করে। এর চেয়ে খারাপ আর কিছু হতে পারে।


ওরিও যেখানে থাকুক ভালো থাকুক। ওরিও'র মা যেন সুস্থ থাকে। বন্ধুরা আপনারা সবাই তাদের হয়ে দোয়া করবেন।

মুল ঘটনা-টি প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল দিদিভাই আমাদের জানিয়েছেন।

ছবি - প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল। 

ঘটনাটি কতটা ভালো লেগেছে আপনাদের সেটি জানিনা। তবে ঘটনাটি হৃদয় বিদারক। ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল প্রাণ।

রবিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২০

অক্টোবর ২৫, ২০২০

কোকোর দুষ্টুমি। Lahari Bhattacharjee। দেখুন কোকোর ছবিগুলি।

ছবি- Lahari Bhattacharjee  
উপস্থাপনায় - Silient Talks Of Midnight Animals     
তো বন্ধুরা সকলে কেমন আছো? আমাদের পেজের গল্প গুলো কিরকম লাগছে তোমাদের? আমাদের উদ্দেশ্যে সকলের কাছে অবলাপ্রাণীদের প্রতি ভালোবাসা সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া। এইজন্য সবসময় চেষ্টা করি তোমাদের জীবনের অভিজ্ঞতা গুলোকে গল্পের গহনাতে ভরিয়ে উপস্থাপনা করতে। যাতে যেসকল মানুষেরা পূর্বে অবলা প্রাণীদের উপর একটু হলেও অবজ্ঞা নজরে দেখতো তাদের পাষাণ মন গলে কচি সবুজ ঘাসে পরিণত হয়। তাই এই প্রচেষ্টা। 

 প্রতিটা মানুষের জীবনে এমন একটা সময় আসে যেই সময়টার স্বাদ তারা বার বার পেতে চায়। সেই সময়টাকে খারাপ সময়ে আঁকড়ে বাঁচতে চায়। কিন্তু চেয়েও পায়না। যতোই বয়স বাড়ে ততোই নানা ধরনের সময়ের সাক্ষী থাকি আমরা..
আসলে বয়স হচ্ছে শুধু একটা সংখ্যার খেলা। যেটার খেলা আমরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে,বিভিন্নসাজে দেখে এসেছি। কিন্তু ছোটোবেলার স্বাদ পেতে কার না ভালোলাগে??

আমাদের পেজটি তো আর রুপকথার পেজ না..পশুপাখি দের ভালোবাসায় ভরা আপনাদের প্রিয় ফেসবুক পেজ - silient talks of midnight animals ( stoma ) পেজটি আজ আবারো চলে এসেছে এক ভিন্ন স্বাদের গল্প নিয়ে। 


আজ আমি তোমাদের ভিন্নস্বাদের একটা ছোটো গল্প শোনাবো।


কলকাতা থেকে অনেকটা দূরে নিউ জলপাইগুড়ির আশেপাশের কোনো এক জায়গাতে ২০১৮ সালের ২৮ শে জুন শুরু হয়েছিলো। ওইদিন ফুটফুটে কোকো নামের এক বিড়ালছানার জন্ম হয়। দিনটা আর কারুর জীবনে স্মরণীয় হোক কিংবা না হোক লাহরী ভট্টাচার্য নামের একজন বিড়ালপ্রেমীর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার কাছে সেইদিন কোলজুড়ে আসে কোকো সোনা। কোকো খুব দুষ্টু মেয়ে। কোকোরা হলো যমজ, কোকোর অন্য বোনের নাম চকো।



ছবি - চকো 

কোকোর মা লহরী খুবই দায়িত্ববান। সে তার সন্তানদের যত্নের কোনো ত্রুটি রাখেনা। বন্ধুরা আসুন আপনাদের একটু অতীতে নিয়ে যাই। এইযে লাহরীর কথা আপনারা শুনছেন ওনার এককালে ৩৬-টা বিড়াল ছিলো। ছানাপোনা, মাঝারি, ও বড়ো বিড়াল মিলে মোট ৩৬-টা বিড়াল ছিলো। তবে তিনি যেহেতু ফ্ল্যাটে থাকতেন। আর বাচ্চাগুলো একে অন্যর সাথে মারপিট করতো এছাড়া নানান রকমের সমস্যায় পড়েন তিনি। তাই তিনি বাচ্চাগুলোকে ভালোঘরে দত্তক দিয়ে দেন। যাতে ওদের কোনো কষ্ট না হয়।

লাহরী মত অনুযায়ী - আমরা চাইলেই ওদের অনেকভাবে সাহায্যে করতে পারি। কারুর বাড়িতে যদি অবলা পোষ্যদের রাখতে কোনো অসুবিধা হয় তো তাদের দত্তক দিয়ে দেওয়া উচিৎ। যাতে তারা সকলে ভালো একটা ঘর ও পরিবার পায়। লাহরী অত্যন্ত কষ্টের সহিত বাচ্চাগুলোকে অন্যর বাড়িতে তুলে দিয়ে আসে। তবে এইসব একদিনে হয়নি। সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে কোকোর যখন একে একে সব ভাইবোনেরা অন্যত্র চলে যেতে শুরু করেছিলো। তখন কোকোর ও মন ভীষণ খারাপ হয়ে গেছিলো।

তো গল্পে আসা যাক। আমাদের কোকো রানী। খুব দুষ্টু৷ নিমেষের মধ্যে কোথায়,কি কাজ করে ফেলবে আপনি ধরতে পারবেন না। কোকোর জন্ম হয়েছিলো তার মা লাহরীর ঘরেই। পুঁচু নামের একটা বিড়াল কোকোর জন্ম দেয়। এই পুঁচুরও একটা ইতিহাস আছে..সে যখন খুব ছোটো ছিলো তখন তার মা, তাকে মুখে করে লহরীর বাড়িতে এনেছিলো। লহরী তিনবছর পুঁচুকে নিজের কাছে রেখে বড়ো করে। তবে পরবর্তীকালে সে তার প্রিয় পুঁচুর আরেক মেয়ে চকোকে দিদার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।

ছবি - পুঁচু কোকোর মা

সকালে কোকোর মায়ের ঘুম ভাঙে কোকোর ছোটো-ছোটো হাতের মার খেয়ে। যদি তার মায়ের ঘুম ভাঙতে  ন'টার এক মিনিটের ও বেশী হয়। তাহলে পুচকে কোকোর নাকি রাগ হয়। বাড়ির প্রত্যেক-টা জিনিস তার দখলে। ঘরের কলিংবেল বাজলে আগে কোকো ছুটে গিয়ে দেখতে যাবে, যে কে এসেছে তার বাড়িতে। যেই আসুক না কেন তাকে ঘর অবধি নিয়ে আসা, আবার যাওয়ার সময় বাইরে দৌঁড়ে গিয়ে ছেড়ে দিয়ে আসাও তার বড়ো এক দায়িত্ব। ঘরের মাইক্রোওয়েভে কেউ হাত দিতে পারবেনা। ওটাও কোকোর দখলে। ওইখানে কোকোর খাবার গরম হয়।



কোকো তার সারাদিনের মনের কথা তার মায়ের সাথেই শেয়ার করে। কোকোর মা কোকোকে প্রচন্ড ভালোবাসে। এইজন্য সে তার মেয়ের মনের কথা কিছুটা হলেও বেশ বুঝতে পারে। কোকোর মায়ের উপর কোকোর কোনো কারনে রাগ হলে সে তার নিজের ছোটো দুটো হাত দিয়ে  মারে। বেশীর ভাগটাই গালেই চড় গুলো দেয়..তবে সেটি তার মা বেশ উপভোগ করে।

কোকো এমনি খুব দুষ্টু হলেও যদি বাড়ির কেউ কোকোকে বকা দেয়। তাহলে কোকো সোজা তার মায়ের কাছে দৌঁড়ে গিয়ে কোলের উঠে শুয়ে পড়ে। যতক্ষণ না পর্যন্ত যে বকা দিয়েছে সে এসে নিজের থেকে কোকোকে কোলে তুলে আদর না করে ততক্ষণ অবধি কোকোর রাগ ভাঙেনা।

কোকোকে দিনে তার মা পাঁচবার খেতে দেয়। কোকোর আবার পছন্দের খাবারের তালিকাটা একটু বড়ো। কোকো ইলিশ ভাত খুব ভালোবাসে। এছাড়া ছোটো মাছ ভাজা, পুডিং, মুড়িও বাদ যায়না। মুড়ি খেতেও কোকো পছন্দ করে। এছাড়া সে pedigree..ভালোবাসে। কোনো কোকো দিন কোকো দুপুরে খাওয়ার সবে ঘুমের দেশে পাড়ি দেয়। তখন কোকো এসে তাকে আস্তে করে ডাক দেয়..মুড়ি খাওয়ার জন্য। তবে কোকোর মা তখন কোকোকে আদর করে ঘুম পাড়িয়ে দেয়। 

কোকোর মা কোকোকে ছাড়া এক মুহুর্ত অন্য কিছু ভাবতে পারেনা। আর কোকোও সে তার বেশীরভাগ সময় তার মায়ের সাথে কাটাই। 

আমাদের কোকোর সবথেকে মহৎ যে গুন সেটি হলো..হেডফোন দেখতে পেলেই হয়েছে মুখে করে নিয়ে খাটের নীচে চলে যায়।
কোকো যখন হেডফোন নিয়ে খেলতে ব্যস্ত ছিলো তখনকার ছবি।

কোকোর মা যখন মাঝেমধ্যে ড্রয়িং করতে বসেন তখন কোকোও তার পাশে বসে থাকবে..সেই সুযোগ পাবে ওমনি পেন্সিল-টা মুখে নিয়ে কামড়ে ভেঙে দেয়। কোনো কোনো সময় পেন্সিল-টা ভেঙেও যায় কামড়াকামড়িতে। কোকোর মা, ভায়োলিন বাজানোর সময় Bow টাকে ধরার জন্য কোকো অপেক্ষা করতে থাকে। দুষ্টুমিতে সে কারুর থেকেই কম যায়না।


আর এসব এতো দ্রুত হয়যে। সেগুলো ক্যামেরা বন্দি করা যায়না।


তো বন্ধুরা এটাই ছিলো আমাদের কোকোসোনার গল্প। তোমরা সকলে কোকো ও তার মা লহরীকে আশীর্বাদ করো যাতে ওরা সারাজীবন এভাবেই একসাথে থাকতে পারে।

শনিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২০

অক্টোবর ২৪, ২০২০

মায়ের ভালোবাসা। Rupsha Sb।

ছবি ও তথ্যসূত্রRupsha Sb
উপস্থাপনায় - Silent Talks Of Midnight Animals       

একটু একটু করে ক্লান্তি গুলো চোখের পাতায় বাসা বাঁধছে..সারাদিনের ক্লান্তি দুর করার জন্য চোখের সাথে আমাদের এই দেহটাকেও বিশ্রাম দেওয়ার প্রয়োজন। আজও মনে পড়ে যায় ছোটোবেলায় ঘুমানোর আগে দাদু-ঠাকুমারা কত গল্প বলতো, শ্লোক বলতো..কিন্তু এখন সেইসব দিনগুলো অতীত। এখন কেউ ঘুমানোর আগে শ্লোক বলে পিঠ সাপটে দেয়না..কিংবা ঘুরতে যাওয়ার আগে পকেটে জোর করে কিছু পয়সা দিয়ে কেউ বলেনা " এইনে টাকাটা রাখ..লজেন্স খাবি " এখন তো আমরা বড়ো হয়ে গেছি। তো বন্ধুরা ছোটোবেলায় না ফিরে যেতে পারলেও ছোটোবেলা টাকে কিছুক্ষণের জন্য উপভোগ করাই যেতে পারে। তো দেরী কিসের..চলে আসুন ঝটপট আমাদের গল্পের দুনিয়ায়। 

দমদম এয়ারপোর্ট গেটের আশেপাশের কোনো এক জায়গা থেকে বালিগঞ্জের এক দিদির কাছে খবর আসে একটা বিড়ালছানা দত্তক নেওয়ার জন্য। সেই বিড়ালছানাটিকে ওখান থেকে নিয়ে অন্য একটা জায়গাই নিয়ে যেতে হবে। ওই বাড়িতে আরও একটা বিড়ালছানা আছে। ছেলে বিড়াল ছানা। যার দত্তক নেওয়ার কথা বলে হচ্চে সে মেয়ে। তো যে দিদির কথা বলছি তার নাম রুপসা। 


এই ছবিটি যাদের বাড়ি থেকে বিড়ালের বাচ্চাটিকে দত্তক দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তেনাদের বাড়ির গ্যারেজে তোলা ছবিটি। এটা শ্যাম্পেনের দত্তক নেওয়ার আগের ছবি।

রুপসা যথারীতি যথাসময়ে যথাস্থানে গিয়ে হাজির হয়ে যায়। কিন্তু ওইযে কথায় আছে কপালের নাম গোপাল..কার ভাগ্যে কোথায় ঘুরে যায় কেউ বলতে পারেনা। যে বিড়ালছানাটি দত্তকের জন্য রুপসা দিদি ওই বাড়িতে গিয়েছিলো..সেই মেয়ে বিড়ালটিকে কিছুতেই ধরা যাচ্ছিলো না প্রথমে। পরে যখন ধরা হলো বাচ্চাটিকে..তখন সে কামড় দিয়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু..ওপর এক ছেলে বিড়ালছানাটি ক্রমাগত ওই দিদির পেছনে ঘুরে বেড়াচ্ছিলো সেইদিন। বাচ্চাটি এতো রুগ্ন যে দিদির মনে সেইসময় বিড়ালছানাটি কোনো দাগ কাটতে পারেনি। কিন্তু তবুও সাহস করে দিদি ওই বিড়ালটিকে ধরে যেই বাড়িতে দত্তক নেওয়া হবে সেখানে পৌঁছে যায়। দিদির মনে তখন একটা বিশ্বাস হয়েছিলো..তারা ওকে ফিরিয়ে দেবেনা। কিন্তু ওইযে ভাগ্যে। আমাদের ছেলে বিড়ালটি সেইদিন প্রতিজ্ঞা করেছিলো সে রুপসার সাথে রুপসার বাড়িতেই যাবে। তাইতো ওই নতুন বাড়িতে যাওয়ার পরেও সে সারাদিন কিছুই দাঁতে কাটেনি। 

রাত অবধি ওই নতুন বাড়ির লোকেরা ওই বিড়ালটিকে চোখে চোখে রেখেছিলেন। প্রায় রাত দুটো বাজার পর যে বা যিনি পাহারায় ছিলেন তার চোখ লেগে যায়। ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে বিড়ালটিকে না দেখতে পেয়ে সকলে ভয় পেতে যান। ওরা সকলে খেয়াল করেন ওই বাড়ির-ই কোনো এক জানলা ঠেলেঠুলে পালিয়ে গেছে বিড়ালটি। উনারা সাথে সাথে রুপসা দিদিকে ফোন করে জানায়।  তো ততক্ষণে নতুন বাড়ির লোকেরা সেই বিড়ালটিকে খুঁজেও পেয়ে যায়। তারা দিদিকে সেই ব্যাপারটি জানায়। কিন্তু বিড়ালটি সেই আগের দিনের মতোন সেইদিনকেও কিছু খাইনি। এই বিষয়টা জানার পর থেকে রুপসা দিদিও চিন্তায় পরে যায়।

দিদি বিড়ালকে বোতল ফিড করানোর সকল সরঞ্জাম নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে খবর পেলো বিড়ালটি আবারো নিখোঁজ। উনারা অনেক খুঁজলো কিন্তু পাইনি। দিদিও শেষবারের মতোন ওদের সাথে বাচ্চাটিকে খোঁজার একটা বৃথা চেষ্টা করলো। কিন্তু পেলোনা। শেষে সবাই যখন পুরোপুরি ব্যর্থ, দিদিও হার স্বীকার করে ফিরছে তখন কোনো এক গাড়ির তলা থেকে বিড়ালটি সরু গলায় ডাকতে ডাকতে বাইরে বেড়িয়ে এলো। ঘটনাটি সকলকে অবাক করে..ওর বাড়ির লোকেরা তন্নতন্ন করে খুঁজেও বিড়ালটির কোনো খোঁজ পেলোনা আর এদিকে ওহ স্বইচ্ছায় নিজে থেকে বেড়িয়ে এসে দিদির কাছে ধরা দিলো।

রুপসা দিদি তখন এটা বুঝতে পারে যে..এই ছেলে মনেপ্রাণে সিদ্ধান্ত নিয়েই নিয়েছে সে রুপসা দিদির বাড়িতেই থাকবে।

দিদির তখন এই বিষয়ে কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিলোনা। কিন্তু ওইযে বিড়ালটির মুখের দিকে তাকিয়ে মায়ায় পড়ে গেলেন। বিড়ালটি ৩৬ ঘন্টার উপরে কিছুই খাইনি। দিদি তাকে তৎক্ষনাৎ একটা পেট স্টোরে নিয়ে গেলো..সেখানে গিয়ে জানতে পারলো ওখানে কোনো ভেট ( vet - পশুচিকিৎসক ) আজকে বসিনি। তবুও কষ্টকরে একজন ভেটের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারলেন বিড়ালটিকে স্যালাইন দিতে হবে । দিদির বক্তব্য অনুযায়ী, পরের দিন যখন ভেটের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়.. severe respiratory tract infection, nebuliser and heat দিয়ে দিয়ে বিড়ালটিকে অনেক কষ্টে সুস্থ করে তোলা হয়। বিড়ালটি আস্তে আস্তে খাওয়া শুরু করে।


এই ছবিটি vet দেখানোর দ্বিতীয় কি তৃতীয় দিনের ছবি।  

সেইদিন থেকেই শুরু হলো রুপসা দিসি আর শ্যাম্পেন এর এক নতুন জীবন। হ্যাঁ ভালোবেসে অনেক নাম ধরেই বাবুকে ডাকা হয় কিন্তু বাবু শুধু এই নামেই সাড়া দেয়।

জন্মতারিখ আনুমানিক ১৫ এই সেপ্টেম্বর ২০১৭..কারণ যার বাড়ির বিড়াল সে নিজেও বলতে পারিনি বিড়ালটার জন্মতারিখ।

শ্যাম্পেন এর এক ভাই আছে যার নাম T'Challa। তার গল্প অন্যদিন শোনাবো।

ভাবতেও অবাক লাগে। দিদিতো সেইদিন একটা বিড়লকে অন্য একটা পরিবারে পৌঁছে দিতে গেছিলো। কিন্তু সেখানে গিয়ে ঘটে গেলো এই ম্যাজিক। শ্যাম্পেনের বোনকে কে দত্তক নেয় সেটা দিদি জানতে পারিনি।


ফ্যামিলির ফটো 

দিদির মনে শ্যাম্পেন অনেকটা জায়গা দখল করে রয়েছে। তারা দুইজন দুইজনকে খুব ভালোবাসে। শ্যাম্পেন যখন দিদির উপর রাগ করে তখন তাকে ট্রিট দিতে হয় নাহলে বাবুর রাগ ভাঙেনা। তবে সত্যি বলতে অহ একদম অভিমানী নয়। যখনি দিদির বাড়ির কেউ কষ্ট পায় কিংবা অসুস্থ হয়ে যায় অহ তখন একদম পাশ ছাড়েনা। বিশেষত দিদির। একটা বিড়াল হয়েও সে রুপসা দিদির একজন আদর্শ ছেলে হয়ে উঠার চেষ্টা করছে।  ওর সবথেকে বিশেষ যে গুন। দিদির প্রতি ভালোবাসা ও এক বিশেষ আকর্ষণ। যার চাকা সেই ছোটোথেকেই ঘুরতে শুরু করেছিলো।


ভাবতেও অবাক লাগে ফেসবুকের একটা পোস্ট দেখে এই একটা দীর্ঘ যাত্রা শুরু হয়েছিলো। যাকিনা আজও বর্তমান। আপনারা সবাই আশীর্বাদ করবেন যেন দিদি ও তার প্রিয় শ্যাম্পেন ভালোথাকে।

শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২০

অক্টোবর ২৩, ২০২০

পলাশবাবু ও কদমার কথা। একটা ভালোবাসার গল্প।



ছবি তথ্যসূত্র - Palash Roy

সকাল থেকেই আকাশ-টা মেঘলা। এই মেঘলা দিন নিয়ে আমরা প্রায় অনেক গল্প-কবিতা শুনে থাকি। তবে এটা যেহেতু বছরের শেষ সময় তাই এখন মেঘলা দিন-টা কিন্তু মনখারাপের বার্তা নিয়ে আসে। মানুষ সারাবছর অপেক্ষা করে বছরের শেষের এই আনান্দময় দিনগুলোর খুশি ও আনান্দ পুরোদমে উপভোগ করার জন্য। কিন্তু ওইযে বৃষ্টি এসে সব মাটি করে দিলো।

তো এইরকম একটা দিনে মন খারাপ করে না বসে থেকে আসুন আমাদের গল্পের দুনিয়ায়। যেখানে পাবেন মজা আর আনন্দ। তাহলে দেরী কিসের..আসুন তবে।

দিনটি ছিলো ২৪/০৯/২০২০।
আমার আর আপনার কাছে এটা একটা সাধারণ বিষয় মনে হলেও সোনারুন্দি গ্রামের পলাশ বাবুর কাছে ওইদিন-টি ছিলো বিশেষ আকর্ষণের।

পলাশ বাবু। পুরো নাম পলাশ রায়। বাড়ি তার মুর্শিদাবাদ জেলার সোনারুন্দি গ্রামে। তো সেই বিশেষদিনে পলাশ বাবুর উঠোনে জন্ম হয় সদ্যোজাত ফুটফুটে এক ছাগল ছানার। পলাশ বাবু ভালোবেসে নাম দেন কদমা।

একই চারিদিকে লকডাউন..বহু মানুষের কাজ চলে গেছে। অনেকের রুজি রোজগারের পথ বন্ধ। মন খারাপের মেঘ বিষাদ প্রবণ মনকে দুঃখের ছোঁয়ায় কলঙ্কিত করে। মনের অগভীর তলে বসে থাকা ডাকপিয়ন যখন নতুন রাস্তা খুঁজে না পেয়ে পরিস্থতির কাছে হার মেনে যায়। পলাশ বাবুর অবসাদের অবসান ঘটাতে ভূমিষ্ঠ হয় কদমা। 

হ্যাঁ এই ফুটফুটে বাচ্চাটি সারা উঠোন ময় চারিদিকে ছুটোছুটি করে বেড়ায়। বেজায় দুষ্টু স্বভাবের হলেও..পলাশ বাবু বলতে অজ্ঞান। পলাশ বাবুকে যেন নিজের কদমা নিজের মায়ের চেয়েও বেশী ভালোবাসে। পলাশ বাবুর তাতে কোনো অভিযোগ নেই। তার বাড়িতে আরও ৪ টে সোনা বাচ্চা আছে। একএকজনের এক একএক নাম। কদমার এক ভাই এবং এক বোন ও আছে তবে তাদের মধ্যে কদমা-ই বড়ো। এছাড়া বাকি দুইজনের মধ্যে একজন ছেলে ও অন্যজন মেয়ে। তারা অবশ্য কমলা ও কমলার ভাই-বোনের থেকে একটু বড়ো।



তবে সকলের চেয়ে কদমা বেশী দুষ্টু। সারা উঠোন ময় চারিদিকে ছুটোছুটি করে বেড়ায়। 

এই ছোটো বাচ্চাগুলো বড়োই প্রাণপ্রিয় পলাশ বাবুর। বাচ্চাগুলোর যখন খিদে পায় তখন তারা পলাশ বাবুর গায়ের উপরে উঠে যায়। পলাশ বাবুর পায়ে পায়ে ঘুরে বেড়ায়৷ যতক্ষণ না বাচ্চাগুলোকে দুধ খাওয়াচ্ছেন পলাশ বাবু ততক্ষণ অবধি মিষ্টি সুরে.. মে..মে করতেই থাকে। তারপর যেইকিনা বাচ্চাগুলোকে দুধ খাওয়ায় পলাশ বাবু। তখন বাচ্চাগুলো যে এতটা আনান্দ হয় সেটা পলাশ বাবুর বুকের বলের অন্যতম কারণ। 

বাচ্চা গুলোর সাথে পলাশ বাবু এতোটাই জড়িয়ে গেছেন যে..এখন যদি রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে কোথো ছাগল কাটার দৃশ্য দেখে, তখন পলাশ বাবুর বুকের ভেতর-টার অবস্থা যে কি হয় সেটা বলে বোঝানো যাবেনা।

তার প্রিয় বাচ্চাগুলো যখন পাড়ার অন্যান্য প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে কোনো গাছ-গাছালি খেয়ে ফেলে..সেই ব্যাপারটা দুইদিন পরে হলেও পলাশ বাবুর কানে যায়। তখন তিনি তার বাচ্চাগুলোকে খুব বকা দেয়. তাদের প্রতি সাময়িক রাগ হলেও ওদের যে মায়াবী চাওনি সেটি দেখে পলাশ বাবুর মনটা গলে যায়।

তবে তাদের মধ্যে ছোটো গোল মিষ্টি বাচ্চাটিই প্রাণপ্রিয় পলাশ বাবুর। যাকে সাধ করে তিনি কদমা নাম দিয়েছেন।

তো বন্ধুরা এই ছিলো পলাশ বাবু আর তার কদমার গল্প। এই দুইদিনের দুনিয়ায় যেখানে চারিদিকে হিংসা,ঝগড়া,হানাহানি লেগেই থাকে সেখানে পলাশ বাবুর মতোন একজন আদর্শ পিতার কথা অজানাই থেকে যায়। তাদের ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব অটুট থাকুক।

উল্লেখিত ঘটনাটির তথ্যে ও ছবি আমরা পলাশ রায়ের থেকে সংগৃহীত করেছি। আপনারা পলাশ বাবু ও তার ছানাপোনাকে আশীর্বাদ করতে ভুলবেন না যেন।

বৃহস্পতিবার, ২২ অক্টোবর, ২০২০

অক্টোবর ২২, ২০২০

ছোটো টিনটিনের মিষ্টি গল্প।

আজ আবারো চলে এলাম তোমাদের গল্প শোনাতে। আজকে যার গল্প শোনাবো তারনাম টিনটিন। আজ থেকে ঠিক বছর খানেক আগেই বেলঘরিয়ার এপ্রিলের ১৫ তারিখ ২০১৯ সালের জন্ম হয় টিনটিন নামের এক আদুরে রাজপুত্রের। হ্যাঁ ঠিক শুনেছেন রাজপুত্র। তার দাপট, চাল চলন সবেতেই একটা নবাবিয়ানা ভাব থাকলেও সে কিন্তু বাস্তবে খুব শান্ত স্বভাবের। খেলা,দুষ্টুমি,খাওয়াদাওয়া সবেটেই পটু আমাদের ছোটো টিনটিন সোনা। 
ছবিতেটিনটিন ও তার মা
এটা টিনটিনের জন্মদিনের উৎযাপনের ছবি। 

টিনটিন সোনা তার মা sudeshna কে খুব ভালোবাসে। টিনটিনের মা হলো টিনটিনের মন খারাপের সাথী। আর পাঁচটা বিড়ালের মতোন, টিনটিন খিদে পেলে কিন্তু আগেভাগে খাবারে মুখ দিয়ে দেয়না..সে তার মায়ের কাছে যায় এবং কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে ডাকতে থাকে। 
এই রাজপুত্রের ডাক শুনে তার মা সহজেই বুঝে ফেলে বাবুর খিদে পেয়েছে।
এটাই মোক্ষম সুযোগ। 
এখন যদি না খাওয়ানো যায় তাহলে পরে অনেক সাধ্যসাধনা করতে হয় গো বাপু।


টিনটিন একটু হলেও বুঝতেবপারে তার মায়ের চোখের ভাষা..সে পড়তে পারে তার মা কি বলতে চাইছে..যদি কোনো কারণে টিনটিনকে তার মা বোকা দিয়েছে..ব্যস তাহলে তো আর কথাই নেইগো..বাবু নিমেষে রাগ ও অভিমান করে করে ফেলে। তবে যেই টিনটিনের মা..টিনটিনকে কোলে তুলে আদর করে..তখন সব রাগ,অভিমান গোলে জল হয়ে মাটিতে মিশে যায়।

টিনটিনের মা শুধু যে টিনটিনের মা..এমন টা নয়..তার আরও একজন সন্তান আছে..
টিনটিনের মা দুইজনকেই ভালোবাসে। তবে গোপনে।
কারণ টিনটিন যদি বুঝতে পারে যে তার মা তাকে ছেড়ে অন্যজনকে আদর করছে তবে টিনটিন অন্যজনকে তো বকবেই সাথে মায়ের উপর রাগ করবে।

টিনটিন এই বন্দুকটাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে খুব ভালোবাসে।
ছবি - Sudeshna Dey

মায়ের কিন্তু সবথেকে বাধ্য ছেলে টিনটিন। সে যথেষ্ট বুদ্ধিমান ও শান্ত। টিনটিনের সময়ের বেশ জ্ঞান আছে।  এই ধরুন ওর খেলার সময়ে যদি ওকে আপনি ঘুম পাড়াতে যান, তাহলে ওহ কিছুতেই ঘুমোবেনা। টিনটিনের খাওয়া হয়ে গেলে ওর মনোভাব দেখে তার মা বুঝে যায় যে..টিনটিনের এবার ঘুমানোর সময় হয়ে এসেছে..ওকে এখন আলমারির উপরে তুলে দিতে হবে। 

তো বন্ধুরা এই হচ্ছে আমাদের টিনটিন। তোমরা ওকে আর ওর মা'কে আশীর্বাদ করো যেন তারা সারাজীবন এইভাবে সুখে থাকতে পারে।
আমাদের পেজথেকে টিনটিন ও টিনটিনের মায়ের প্রতি ভালোবাসা রইলো।

বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০২০

অক্টোবর ২১, ২০২০

এক মা ও তার দুই সন্তানের গল্প। ডাম্বেল ও দুলকিরানী।

গল্প - ডাম্বেল ও দুলকিরানী
তথ্য ও ছবি - দেবযানী বান্টি মুখার্জী।
উপস্থাপনায় - silent talks of midnight animals 

দেখতে দেখতে বছর-টা শেষের পথে। সেইযে মার্চ মাস থেকে ঘরে ও বাহিরের যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে যা বর্তমানেও ক্রমশ চলমান। তবে বছরের শেষের দিকে বাঙ্গালীরা যে পূর্বে উৎসব ও আনন্দে মেতে উঠতো তা আর এখন ক্রমশঃ অতীত হতে চলেছে। একঘেয়ে জীবন, অশান্তি,বিভিন্ন দায়-দায়িত্বর শিথিলতায় মাঝেমধ্যে মনে হয় সব ছেড়েছুড়ে যদি ছোটোবেলায় চলে যেতে পারতাম তাহলে কি না ভালো হতো। গল্প, কত নাম না জানা খেলা, ভাব-আড়ির স্মৃতি

তো ছেলেবেলায় ফিরে না যেতে পারলেও ছেলেবেলাকে কিছুটা হলেও উপলব্ধি করাই যেয়ে পারে..

আজ আমি আপনাদের বিড়ালের দুনিয়ায় নিয়ে যাবো। যেখানে মারামারি,হিংসা,খুনসুটি না থাকলেও
রয়েছে শুধু গল্প আর গল্প। 


আজ যে ভদ্রলোকের সাথে আপনাদের পরিচয় করাবো তার নাম ডাম্বেল। খুব শান্ত ও ভদ্র বিড়াল সে। খেতে খুব ভালোবাসে। মাছভাত,দুধ,কর্ণফ্লেক্স রয়েছে তার পছন্দের তালিকার শীর্ষে।

ছবি - ডাম্বেলবাবু

হি হি..আমাদের ডাম্বেল বাবু কিন্তু সবার থেকে আলাদা গো বাপু। 

সকালে যখন ডাম্বেলের মা ( দেবযানী মুখার্জী ) তরকারি কাটতে বসেন তখন ডাম্বেল বাবু তার মায়ের পাশে চুপটি করে বসে থাকে। না না এমনি এমনি বসে থাকেনা তাকে একপ্রকার বসিয়ে রাখতে হয়,  নাহলে ফাঁক পেলেই খেলতে বেড়িয়ে যায়। তাকে বসিয়ে রাখার জন্য ঘুষ দিতে হয় গো বাপু।

হ্যাঁ ঠিক শুনেছেন।



ডাম্বেল বাবুর মা যখন তরিতরকারি কাটেন তখন ডাম্বেল-কে পেপে,শশা,গাজর এইসব দিয়ে খুশি রাখতে হয়।

হুম বটে..
আমাদের ডাম্বেল বাবুর ব্যাপারখানা মোটেই আর পাঁচটা বিড়ালের মতোন নয়।

ডাম্বেল বাবুর একজন বোন আছে যার নাম দুলকিরানী। স্বভাবে কিন্তু সে খুব দুষ্টু। যেই খাঁচা-টি আপনারা দেখছেন ওটাই ওর পছন্দের জায়গা। ওর ভেতর দুলকিরানী তার প্রিয় দুইখানা পুতুল নিয়ে ঘুমোয়।

ছবি - দুলকিরানী

 এইযে এই খাঁচাটি দুলকিরানীর খুব প্রিয়।

এইযে দুলকিরানী তার পুতুলের সাথে এই খাঁচাতে ঘুমোয়।

দুইজনে খুব দুষ্টু হলেও তাদের মা দেবযানীর কাছে চোখের নয়নের মণি, বুকের বল।


ডাম্বেল যখন বাইরে থেকে বাড়িতে আসে তখন সে এদিকওদিকে না তাকিয়ে সোজা মা কে ডাকতে থাকে। তার গলার স্বরে তখন এমন এক ব্যকুলতা সৃষ্টি হয় যেন সে তার মায়ের প্রতি খুব চিন্তাশীল তবে তাদের মা দেবযানী যতক্ষণ না অবধি সারা দিচ্ছে ততক্ষণ ডাম্বেল বাবু তার মায়ের খোঁজ করতে থাকবে। 
তার গলার স্বরে এইরকম একিটা মাদকতা আছে যেটা কিনা মাঝেমধ্যে সত্যিকারের মানুষের কন্ঠের রূপ নেয়।
বিড়ালের ডাকটা তখন " মা " ডাকের মতোন শোনায়। যদি ডাম্বেল বুঝতে পারে যে..তার মা বাড়িতে নেই.. 
তাহলে ব্যস বাবুর রাগ অভিমান করে বোসে।

আর এদিকে দুলকীরানী তার মা ( দেবযানী ) ছাড়া কিছুই বোঝেনা। সারাক্ষণ যতোই দুষ্টুমি করুক না কেন..যেই তার মা একটু ডাক দেয়..ব্যস মহারানী যেইখানেই থাকুক দৌঁড়ে চলে আসে।

এদিক থেকে দেখলে দুইজনেই তাদের মায়ের বাধ্য সন্তান। তাদের মা ও তাদের দুইজনকে খুব ভালোবাসে..
দেবযানী একজন আদর্শ মা হয়ে উঠেছেন। তিনি তার সন্তানদের মুখের দিকে তাকালেই বুঝে যান তাদের কি হয়েছে..তাদের অসুবিধা কি।


বাচ্চাগুলোর মা দেবযানীর যখন খাটে বসে থাকে..তখন যদি ডাম্বেলের মায়ের কোলে উঠার ইচ্ছা হয়..সেক্ষেত্রে বাবু এমন করুণ দৃষ্টিতে তাকাবে তার মায়ের দিকে..সেই দৃষ্টি দেখে মা বুঝে যান যে..ছেলের এখন কোলে উঠতে চাইছে।

কিন্তু দুলকিরানীর ব্যাপারটা আলাদা। ওহ নিজের ইচ্ছায় চলে। ওর দুনিয়া হলো - ওর মা। ওর যতো আবদার সব মায়ের কাছেই। 

ওদের নিয়ে কথা বললে কথা শেষ হবেনা। আসলে ভালোবাসাটাই আসল। আমরা যারা বাড়িতে বিড়াল কুকুর পুষি তারা সকলেই ওদেরকে নিজেদের পরিবারের সদস্য হিসেবেই দেখি। 

মাঝেমধ্যে ভাবতেও অবাক লাগে যে, কুকুর বিড়ালের মতোন এই নিরীহ প্রাণী গুলো প্রতিদিন কোনো না কোনো কারণে পৃথিবীর কোনো না কোনো জায়গাই অত্যাচারের স্বীকার হয়ে উঠছে।
ফেসবুকে চোখ পাতলেই এইরকম হৃদয় বিদারক দৃশ্যে প্রায় চোখে আসে।

তবে এই গল্পের যিনি মা হিসেবে পরিচিত, হ্যাঁ তার নাম দেবজানী মুখার্জী। তিনি সত্যিই একজন পশুপ্রেমী হলেও। তার কৃতিত্বের শেষ নেই।

তবে ওইযে কথাই আছেনা অতিত নামক এক হৃদয়হীন বস্তু। যা সত্যিই খুব কষ্টকর।
ডাম্বেলের ছোটোবেলার ছবি 

এই দুটো বিড়াল প্রত্যেকেই কুড়িয়ে পাওয়া। দেবযানী দুইবার-ই ভিন্নভিন্ন জায়গা থেকে বিড়াল গুলোকে কুরিয়ে পেয়েছে।

দিনটা ছিলো ১৫ নভেম্বর, ২০১৫ সাল। এক কি দেড় মাস বয়স হবে ডাম্বেলের৷ নিজেই হেঁটেহেঁটে আসছিলো। তারপির জঙ্গল টপকে দেবযানীদের বাগানে ঢুকে যায়। অতীব পাকা ছোকরাটাকে দেবযানী পরম স্নেহের সাথে বাগান থেকে তুলে ঘরে আনে। ঘরে ঢুকেই খেলাধুলা শুরু করে দেয়। সে তার রুপের ডালি দেখিয়ে সবার মন জয় করে। শুরু হলো এক নতুন ইতিহাস, সাথে একটা নতুন নাম ডাম্বেল।

দুলকিরানীর ছোটোবেলার ছবি 

 দেবযানী আমফানের আগের দিনের সকালে রাস্তা থেকে কুরিয়ে পায়। রাস্তায় কেউ ছেড়ে দিয়ে চলে গিয়েছিলো বিড়ালটিকে। বিড়ালের বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনে তাড়াতাড়ি করে দৌঁড়ে গিয়ে দেখে.. একটা ছোটো বিড়ালের বাচ্চা রাস্তায় পড়ে আছে। 
দেবযানীর খুব মায়া হয়। সে আর পাঁচজনের মতোন মুখ ঘুরিয়ে যেতে পারেনি সে ওই বিড়ালের বাচ্চাটিকে কোলে তুলে নিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে। খুব কষ্ট করে ওকে বাঁচানো হয়। ড্রপারে করে  দুধ খাওয়ানো থেকে শুরু করে যত্ন..কোনো কিছুতেই সে ত্রুটি রাখেনি। ধীরেধীরে সেও বড়ো হয়ে চলেছে। আপনারা সবাই আশীর্বাদ করবেন।

সত্যিই কত বিচিত্র এই দেশ। যেখানে প্রতিনিয়ত বিড়াল কুকুরেরা রাস্তায় কোনো না কোনো ভাবে অপদস্থ হচ্ছে। কেউ বাড়িতে বিদেশী কুকুর পুষছে..দুইদিন পর সখ মিটে গেলে গোপনে রাস্তায় ছেড়ে দিয়ে যাচ্ছে। 

আবার, কেউ কেউ এমনও আছে বিড়াল,কুকুর দের নিয়ে ফেসবুকে অজস্র ভালোভালো ছবি ছাড়ছে..ক্যাপশনে লিখছে..আজ আমার বাচ্চা-টা বিছানার চাদর ছিঁড়ে দিয়েছে খুব দুষ্টু। 
আজ আমার বাচ্চাটা আমাদের পাতের খাবারে মুখ দিয়ে দিয়েছে..আমরা একসাথে খাবার খেয়েছি। ওহ বিড়াল বলে কি মানুষ নয়।

কিন্তু বাস্তবে হয়তো তাদের মধ্যেই অনেকেই আছেন ( দুইদিনের পশুপ্রেমী ) তারা এইসব ঘটনায় ভয়ঙ্কর শান্তি দেন তাদের পোষ্যদের।

 সেইখানে দেবযানীর মতোন অনেকেই আছেন। যারা রাস্তায় ফেলে দেওয়া বিড়াল কুকুরকে বাড়িতে এনে মাতৃস্নেহে বড়ো করে তোলে।
আমাদের তরফ থেকে দেবযানীর মতোন একজন আদর্শ মা'কে স্যালুট জানাই।
মায়ের সাথে ডাম্বেলের ছবি

মায়ের সাথে দুুুলকিরানীর ছবি

তো বন্ধুরা এই হলো একজন আদর্শ মা ও তার ছেলে মেয়ের গল্প। আমাদের গল্পটা কেমন লাগলো অবশ্যই জানিও। আর তোমাদের কাছে এইরকম গল্প থাকলে আমাদের কাছে অবশ্যই পাঠিও।  

অঙ্কিতা দিদি ও দিদির ছানাপোনা

বন্ধুরা সবাই কেমন আছো? অনেকদিন পর আবারো একটা গল্প নিয়ে চলে এলাম।  যেই গল্পের মুখ্য চরিত্র কাজল, আলু আর মায়াকে নিয়ে। অঙ্কিতা দিই হচ্ছে এই বাচ...